ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জেএমবি’র সিরিজ বোমা হামলা: ১৭ আসামির কারাদণ্ড 

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৭:৩৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১
জেএমবি’র সিরিজ বোমা হামলা: ১৭ আসামির কারাদণ্ড 

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী ৬৩ জেলার মধ্যে সাতক্ষীরার পাঁচ স্থানে জেএমবি’র বোমা হামলা মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে ৮ জনকে পৃথক মামলায় সর্বোচ্চ ১৩ বছর ও ৯ জনকে ৯ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। 

এসময় একজনকে খালাস দেওয়া হয়। অপর এক আসামি আগেই মারা যান। পলাতক রয়েছেন তিনজন। 

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক জনাকীর্ণ আদালতে ১৪ আসামির উপস্থিতিতে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পালিক প্রসিকিউটর (পিপি) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত অসামিরা হলেন— মনিরুজ্জামান, নুর আলী, গিয়াস উদ্দিন, ইসমাইল হাবিবুর, বিল্লাল হোসেন, মুনতাজ, মাহববর রহমান লিটন, রাকিব হোসেন, মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, আসাদুর রহমান, আনিসুর রহমান, আলমগির হোসেন, নাসির উদ্দিন এবং পলাতক আসামিরা হলো, ফখরুদ্দিন রাজি, অসাদুজ্জামান ও নাঈমুদ্দিন।

সাতক্ষীরা অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ জানান,২০০৫ এর ১৭ আগস্ট শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিররুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের রওশানের দেওয়া বিবরণ মতে ধরা পড়ে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়। এই সূত্র ধরে ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি ৬ টি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। সে বছরই  মামলাগুলো খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। যথা সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ এর ২৫ জুন মামলাগুলো খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়।

২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মামলাগুলোর বিচার কাজ শুরু করেন।  সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়ের করা মামলাটিরও ২০০৮ সালে বিচার শুরু হয়। আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৬টি মামলার মধ্যে একটি মামলায় সকল আসামির অব্যহতি দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেন জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ। তিনি জানান, সাক্ষীদের সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং আলামত জব্দের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় এ মামলার রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির মধ্যে দিয়ে ন্যায় বিচার হয়েছে।

অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জিএম আবুবকর সিদ্দীক বলেন, আসামিরা ন্যায়বিচার পাননি । তারা উচ্চ আদালতে অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন।

শাহীন/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়