‘মহাসড়কে অটোরিকশা না চললে দুর্ঘটনা কমে যাবে’
ফারুক আলম, লালমনিরহাট || রাইজিংবিডি.কম
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগের ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে ১২০ কিলোমিটার হাইওয়ে সড়ক। এই সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য পাথরবোঝাই ট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া, এলজিডির সড়কগুলোও থাকে ব্যস্ত।
স্থানীয়রা বলেন, প্রায় দিনই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর আসে। যার অধিকাংশ ট্রলি, অটোরিকশার সঙ্গে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষ। মৃত্যু ছাড়া বাকি সব দুর্ঘটনার খবর থেকে যায় অন্ধকারে। মহাসড়কে যদি এ ধরনের যানবাহন চলাচল না করে তবে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কে খানা-খন্দ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রলি এবং ওভারলোডিংই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সড়কে প্রতিনিয়ত ট্রলিতে করে মালামাল পরিবহন করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নসীমন, করিমনে গরু-মহিষ আনা নেওয়া করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, এসব যানবাহনে বন্ধে প্রতিনিয়ত তাদের কার্যক্রম চলছে।
আদিতমারী সরকারি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি নিজেও মোটরসাইকেল চালাই। এসবের কারণে সমস্যায় পড়তে হয়। তবে অটোচালকরা গরিব মানুষ। আমাদের এই অঞ্চলে ট্রাক্টরগুলো চাষাবাদের জন্য কেনা হয়। ৩ থেকে ৪ বছর পর চাষাবাদের অনুপোযোগী হয়ে যায়। পরে তারা সেখানে ট্রলি লাগিয়ে মালামাল পরিবহন করে। অটোরিকশা, ট্রাক্টর-ট্রলি, নসিমন-করিমনের মতো যানবাহন মানবিক দৃষ্টিতে স্থানীয় রোডে চলতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই মহাসড়কে এদের উঠতে দেওয়া ঠিক হবে না।’
রাকিব সরকার বলেন, ‘করোনার এই সময়েও অটোরিকশাতে করে ১০/১২ জন করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। তাতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকেই যায়। নসিমন, ট্রাক্টর ট্রলিতে মানুষ, গরু-মহিষ, মাটি, ইট বালু পরিবহন করা হয়। এতে দুর্ঘটনা বাড়ছে।’
এদিকে অটোরিকশা মালিকদের সাঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ইউনিয়ন পরিষদ ৬০০ টাকা, পৌরসভা এলাকায় ১২০০ টাকা ফি দিয়ে লাইসেন্স নেন। লাইসেন্স নিলে তাদের চলতি পথে হেনস্থা করা হয় না। তবে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা স্ট্যান্ডগুলোতে অটো প্রতি ১০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। পুলিশের প্রয়োজনে অটোরিকশা রিকুইজেশন করে। সন্ধ্যা ৭টায় রিকুইজেশন করা অটোকে সকাল ৭টা পর্যন্ত থাকতে হয়। এসময় তারা ২৪৫ টাকা এবং এক বেলা খাবার পায়। একটা অটোরিকশা রিকুইজেশন করলে পরবর্তী এক মাস সেই অটোরিকশা আর নেওয়া হয় না।
রাকিব হোসেন নামে এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। পরিবারে পাঁচ জন লোক। আর আয় করি শুধু আমি। ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে কোনো মতে সংসার চালায়। কৃষি জমিও নেই। অন্য ব্যবসাও করতে পারি না। অটো চালাতে না পারলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।’
ঢাকা/ইভা
আরো পড়ুন