বইমুখী করতে ‘লঞ্চঘাট পাঠাগার’
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
‘যাত্রা পথের অবসরে-সময় কাটুক বই পড়ে’ এমন স্লোগানে শাকবাড়িয়া নদীর কাটকাটা লঞ্চঘাটে গড়ে তোলা হয়েছে ‘লঞ্চঘাট পাঠাগার’।
সুন্দরবন ঘেঁষা খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এই শাকবাড়িয়া নদী। তীরে কাটকাটা লঞ্চঘাটের পন্টুন। বেড়িবাঁধ হতে পন্টুন পর্যন্ত পাকা রাস্তা ও কাঠের তৈরি পথ। প্রতিদিন এখানে শতাধিক ভ্রমণ বিলাসী মানুষ যাত্রা বিরতিতে প্রায় ২-৩ ঘন্টা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
এসব মানুষকে বইমুখী করতে স্কুলশিক্ষক শেখ হুমায়ূন কবীর স্থানীয় তরুণদের সহযোগিতায় গড়ে তুলেছেন এই ‘লঞ্চঘাট পাঠাগার’। গত শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ লঞ্চঘাট পাঠাগারটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
নদীর তীরে পাঠাগারের এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই এলাকার সর্বসাধারণের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এ উদ্যোগের মধ্যদিয়ে সুন্দরবন এলাকায় বেড়াতে আসা মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে স্থানীয় তরুণদের অতিমাত্রায় ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবের আসক্তি কিছুটা হলেও কমাবে বলে মনে করছেন পাঠাগারের উদ্যোক্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শত কিলোমিটার দুর থেকে লঞ্চ আসে। কখনো মাঝরাতে, কখনো বিকেলে। এক পাশে নয়নাভিরাম সুন্দরবন, অপরদিকে লোকালয়- এমনি মনোমুগ্ধকর পরিবেশে লঞ্চঘাটে প্রিয় সব লেখকের বইয়ের সমাহার। এক অনন্য মাত্রা যোগ হয়েছে এলাকাটিতে। লঞ্চের যাত্রীসাধারণ ছাড়াও এলাকাবাসীর বৈকালিক ভ্রমণ ও বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পাঠাগারের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ স্থানীয় যুবকদের।
পাঠাগারের উদ্যোক্তা স্কুলশিক্ষক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রতিদিন এখানে শতাধিক মানুষ অবসর সময় কাটাতে এসে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে আমি এ উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ পাঠাগারের মাধ্যমে অবসর কাটাতে আসা মানুষ, স্থানীয়রাসহ লঞ্চের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীরা বই পড়ে সময় কাটাতে পারবে, তাদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে উৎসাহ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস। পাঠাগারের উদ্বোধনও করেন তিনি। উদ্বোধনকালে তিনি পাঠাগারের বই কেনার জন্য ব্যক্তিগতভাবে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এছাড়া সার্বক্ষনিক পাশে থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন শুভাকাঙ্খী মনজুর এলাহী বিদ্যুৎ, হুমায়ূন বিশ্বাস, ইদ্রিস, গনেশ, রিপন, উজ্জ্বলসহ স্থানীয় লোকজন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নূরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, আইসিডির সভাপতি মো. আশিকুজ্জামান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান গনেশ মণ্ডল, প্রভাষক মো. ইদ্রিস আলী, মানবকল্যাণ ইউনিটের সভাপতি আল-আমিন ফরহাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হুমায়ূন কবীর মধু, সরদার মাহবুবুর রহমান, শিক্ষক মনজুর এলাহী বিদ্যুৎ, রিপন শেখ ও উজ্জ্বল মুণ্ডা প্রমুখ।
খুলনা/নূরুজ্জামান/টিপু
আরো পড়ুন