ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যশোর বোর্ডে ১৭শ শিক্ষার্থীর পুনঃনিরীক্ষার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১১:৫৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
যশোর বোর্ডে ১৭শ শিক্ষার্থীর পুনঃনিরীক্ষার আবেদন

যশোর শিক্ষাবোর্ডে ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করেছেন এবার এইচএসসির অটোপাস করা ১৭শ শিক্ষার্থী। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এর ফল প্রকাশিত হবে।

পরীক্ষার্থীদের এবারের আবেদন নিয়ে খানিকটা মুশকিলে পড়েছেন শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।  তারা বলেছেন, এবার নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃপরীক্ষার আবেদন করেনি। এ কারণে তাদেরকে সকল বিষয়ে জেএসসি ও এসএসসির খাতা নিরীক্ষা করেই ফল তৈরি করতে হচ্ছে।

যশোর শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে, ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ছিল দেশের ইতিহাসে ব্যতিক্রমী। করোনা মহামারির কারণে ওই বছরে দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। তারপরও শিক্ষাবোর্ডগুলোকে ফল প্রকাশ করতে হয়েছে।  এইচএসসি পরীক্ষায় আবেদনকৃতদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষাবোর্ডগুলো ফল তৈরি করেছে। এবারের যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অটো পাস করেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৫শ ২৮ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২ হাজার ৮শ ৯২ জন। 

যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান বিষয়গুলোর গড় মূল্যায়ন করে জাতীয় পরামর্শক কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ ছাড়াই ফল তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার ফল তৈরি করেছে সব শিক্ষাবোর্ড। ফল মূল্যায়নে জেএসসিতে ২৫ ও এসএসসিতে ৭৫ নম্বর ধরা হয়েছে। 

যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, একাধিকবার তারিখ পিছিয়ে এবারের এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। এ ফল তৈরিতে তাদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জেএসসি ও এসএসসির নম্বরপত্র তাদের মূল্যায়ন করতে হয়েছে। যদিও এ কাজটি তাদের করতে হয় না। শিক্ষকরা পরীক্ষার খাতা দেখেন, তাদের শুধমাত্র সমন্বয় করতে হয়। ফলে নতুন সিস্টেমে ফল তৈরিতে তারা হিমশিম খেয়েছেন।

এদিকে, নিয়মানুযায়ী ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করতে হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিল এ আবেদনের শেষ দিন। এ সময়ের মধ্যে যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বিভিন্ন কলেজের মোট ১৬ শ ৯৫ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ১২৫ টাকা ফি দিয়ে টেলিটকের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়েছে। যেহেতু এ বছর পরীক্ষা হয়নি, ফরম পূরণ করা সব পরীক্ষার্থীকে অটো পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে বিষয় অনুযায়ী পরীক্ষার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পায়নি। তারা মূলত গ্রেড পরিবর্তনের আবেদন করেছে। এ কারণে আবারো তাদের জেএসসি ও এসএসসির নম্বর পুনঃনিরীক্ষা করা হবে। এখানে কোন ভুল থাকলে আবেদনকারীদের ফলে পরিবর্তন হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, এ বছর ফল নিরীক্ষার আবেদনের সংখ্যা খুবই কম।  তবে ভিন্ন পদ্ধতিতে এ বছর ফল প্রকাশের কারণে ভিন্নভাবেই নিরীক্ষা করা হচ্ছে। নতুন পদ্ধতিতে ফল তৈরির কারণে যদিও নিরীক্ষার কোন প্রয়োজনীয়তা ছিল না। তারপরও যারা আবেদন করেছে, তারা সন্দেহের বশীভূত হয়ে কাজটি করেছে। জেএসসি ও এসএসসির প্রধান বিষয়গুলোতে নম্বর কম থাকায় পরীক্ষার্থীদের হয়তো আশানুরূপ ফলাফল হয়নি। অন্য বিষয়ে তাদের বেশি নম্বর থাকায় শিক্ষার্থীরা আরো ভাল ফল আশা করেছিল। এ কারণে তারা নিরীক্ষার আবেদন করেছে।

তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের একমাসের মধ্যে আবেদনকারীদের পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে। এ হিসেবে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তারা নিরীক্ষার রেজাল্ট ঘোষণা করবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট এক লাখ ২১ হাজার ৫শ ২৮ জন পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের কথা ছিল। এরমধ্যে ছাত্র ছিল ৬১ হাজার ৭শ ৬১ জন ও ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭শ ৬৭ জন। ঘোষিত ফলে এরা সবাই অটো পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২ হাজার ৮শ ৯২ জন।  উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ক্যাজুয়ালও রয়েছেন।  যারা গত বছরের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন।  ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় ছিল গত বছরের এপ্রিল মাসে।  কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকায় পরীক্ষা হয়নি। 

যশোর/রিটন/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়