ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পাথর-পানি-পাহাড়ের মিতালি দেখতে পর্যটকের ঢল

আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৯:৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
পাথর-পানি-পাহাড়ের মিতালি দেখতে পর্যটকের ঢল

করোনা সংক্রমণ রুখতে গত বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে সিলেটের সব পর্যটন স্পট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। টানা কয়েক মাস স্পট বন্ধ থাকার কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তদের।

তবে সেপ্টেম্বর থেকে কড়াকড়ির শিথিলতার কারণে পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের আগমন বাড়তে থাকে।  এরপর থেকে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরে পর্যটন ব্যবসা।  মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের টানা ৩ দিনের ছুটিতে এ জেলায় বেড়াতে এসেছেন লাখো দর্শনার্থী।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) দর্শনার্থীরা দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। পাথর-পানি-পাহাড়ের মিতালি দেখতে কেউ ছুটে যান পিয়াইন তীরের জাফলং। আবার কেউ ছুটে গেছেন ধলই নদের উৎসমুখের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে।  অনেকেই আবার ছুটে গেছেন নীল জলের লালাখালে কিংবা জলারবন রাতারগুলে।

সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটন স্পটগুলোর অবস্থান সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলা। এ উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মী মনজুর আহমদ বলেন, জাফলংয়ে শুক্রবার থেকে পর্যটকের ঢল নামে।  শনিবার পর্যটক বহনকারী কয়েক সহস্রাধিক গাড়ি সেখানে আসে। পাশাপাশি পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, রাতারগুলেও পর্যটকদের ভিড় লক্ষণীয় ছিল।

তিনি বলেন, করোনার কারণে এ উপজেলার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। পর্যটকদের আগমনের কারণে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। এ মৌসুমে তারা তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

কোম্পানীগঞ্জের স্থানীয় সংবাদকর্মী আবিদুর রহমান বলেন, টানা ৩ দিনের ছুটির কারণে ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্টের ‘সাদাপাথর’ এলাকায়ও ভিড় বেড়েছে দর্শনার্থীদের।  এই স্থানটি এখন পর্যটকের পদভারে মুখর। পর্যটক বেশি থাকায় ওই স্পট ঘিরে গড়ে ওঠা পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের দম ফেলার ফুসরত নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সিলেট রিজিওনের এসপি মো. আলতাফ হোসেন পিপিএম বলেন, টানা ৩ দিনের ছুটিতে সিলেটে দেড়-দুই লাখ পর্যটক এসেছেন। এর মধ্যে কেবল জাফলংয়েই শনিবার লক্ষাধিক পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। এর বাইরে অন্য পর্যটন স্পটগুলোতেও পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে।

এদিকে, দর্শনার্থীদের ঢল নামায় সিলেটের হোটেল-মোটেলে ফিরেছে প্রাণ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই হোটেল-মোটেলের সব কক্ষ ভাড়া হয়ে যায়।  যে কারণে যারা আগাম কক্ষ বুকিং না দিয়ে সিলেট এসেছিলেন, তাদের পড়তে হয়েছে বিপাকে।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসা অনেক দর্শনার্থী আবাসন সংকটের কারণে ভ্রমণ সংক্ষেপ করে ফিরে গেছেন নিজ গন্তব্যে। আর কেউ কেউ আবার বিকল্প হিসেবে পরিচিতজনদের বাসায়ও উঠেছেন। আর যাদের এমন কোন ব্যবস্থাও ছিল না তারা রাত কাটিয়েছেন হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজারে।

হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি সুমাত নূরী জুয়েল বলেন, ট্যুরিজমের সিজন হওয়ায়  ফেব্রুয়ারিতে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।  আর টানা ৩ দিনের ছুটির কারণে সব হোটেলেই কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে যায়। এ কারণে আবাসন সংকট দেখা দিয়েছে।  এই সংকট শুধু সিলেটে নয়, দেশের সব পর্যটন স্পটেই দেখা দিয়েছে।

সিলেট ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন বলেন, করোনার কারণে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রে কাজ করা ট্যুর গাইডরা কর্মহীন ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পর্যটকরাও নিয়মিত আসছেন। তবে এ সপ্তাহে পর্যটকদের আগমন বেশি হওয়ায় তাদের সেবা দিতে ট্যুর গাইডদের ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে।

নোমান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়