পরনের কাপড় ছাড়া সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সুফিয়ার
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে লাগা আগুনে মাথা গোজার ঠাঁইসহ পুড়ে গেছে সুফিয়ার ছোট্ট সংসার। মুহূর্তের আগুনে এলোমেলো হয়ে গেছে স্বামী পরিত্যক্তা ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধার জীবন। পেটের ক্ষুদা নিবৃত্ত করতে হাত পাতছেন মানুষের কাছে।
সোমবার (১ মার্চ) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াঙ্কা পাল রাইজিংবিডিকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম খলাগ্রামে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে গত ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন জনের বাড়িতে রাত্রী যাপন করছেন সুফিয়া। বার্ধক্যজনিত নানা রোগের কারণে কাজ করতে না পারায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাধ্য হয়ে মানুষের কাছে হাত পাতছেন তিনি। এদিকে, তার ১৫ বছর বয়সি ছেলেটি ট্রাকের হেলপারের কাজ করছে।
জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগে একই উপজেলার মেদিনিমহল এলাকার হামদু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সুফিয়ার। এর আগে আরেকটি বিয়ে করেছিলেন সুফিয়ার স্বামী হামদু। ৩ বছর আগে হামদু মিয়া সুফিয়াকে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে কোনো খবর রাখেন না সুফিয়ার। বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দোকান ও বাজারে পানি বহনের কাজ করে কোনো রকম চলতো সুফিয়ার সংসার। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের পর সুফিয়া এখন নিঃস্ব।
স্থানীয়রা জানান, সুফিয়ার কোনো জায়গা সম্পত্তি না থাকায় আব্দুল বাছিতের বাড়িতে ভাড়া ছাড়াই থাকতেন সুফিয়া। এটা পুড়ে যাওয়ায় এখন আর তার মাথা গোঁজার জায়গা নেই।
সুফিয়া বেগম জানান, বিদ্যুতের আগুনে সবকিছু ছাই হয়ে গেছে। পরনের কাপড় ব্যতীত আর কিছু নেই। সকলের কাছে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী কামরান আহমদ জানান, আগুনে বাড়ি পুড়ে যাওয়ার পর সুফিয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বেঁচে থাকার তাগিদে ভিক্ষা করছেন। অনেকেই সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু আদৌ কেউ সহায়তা করেননি। খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন সুফিয়া।
এ বিষয়ে মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান সালেক মিয়া জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহায়তায় সুফিয়া বেগমের জন্য একটি বাড়ির ব্যবস্থা করা হবে।
ইউএনও প্রিয়াঙ্কা পাল জানান, সুফিয়া বেগমের জন্য দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পরবর্তীতে জায়গা পাওয়া গেলে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করা হবে।
সাইফুল্লাহ/বুলাকী
আরো পড়ুন