ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘পুঁজি-রুজি খেয়ে নিলো আগুনে’

আমিরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ২ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৭:০২, ২ মার্চ ২০২১
‘পুঁজি-রুজি খেয়ে নিলো আগুনে’

তখনও ভোর। জেগে ওঠেনি মহল্লা। নামাজ শেষে কয়েকজন মুসুল্লি মসজিদ থেকে বের হচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিসের সাইরেনের শব্দে চমকে ওঠেন তারা। কিছুদূর এগিয়ে দেখতে পান আগুনে ভোরের আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছে। শিশু সূর্যের আভাকে মলিন করে দিয়ে লকলকে জিহ্বায় কাপড়ের মার্কেট গ্রাস করেছে আগুন! 

মঙ্গলবার (২ মার্চ) ভোরে রংপুরের শাহ্ জামাল মার্কেটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

এতে ২০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা। নিঃস্ব হয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন ব‌্যবসায়ী।
ব‌্যবসায়ীদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে মার্কেটে। অনেক কাপড় ব্যবসায়ীর ব্যাংক লোন নেওয়া আছে। বিষয়টির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে ওই মার্কেটের সামনে হাজির হন ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান। ওই মার্কেটে তার চারটি দোকান ছিল। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘আগুনে আমার সব শেষ হয়ে গেল। এতো দিনে যা সঞ্চয় করেছি, সবকিছু আগুনে পুড়ে শেষ। কোনো মালামাল রক্ষা হয়নি। দোকানে টিনের চাল উড়ে গেছে। লাখ লাখ টাকার মেশিন, স্টকে রাখা কাপড় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঈদের আগের প্রস্তুতি নিতে দোকানগুলোয় অনেক কাপড় ছিল। সব শেষ!’

শাহ্ জামাল মার্কেটের নিচে পাইকারি কাপড় বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরির ছোট ছোট কারখানা এবং ফ্রিজ কোম্পানির গোডাউন ছিল। তবে পাইকারি ও তৈরি কাপড়ের দোকানই ছিল বেশি।

ব্যবসায়ী হোসেন রনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সদস‌্যরা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমাদের কিছুই রক্ষা হয়নি। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়। মার্কেটের সামনের দোকানগুলো রক্ষা হলেও ভিতরে অনেকের মালামাল, পুঁজি সবই আগুনে পুড়ে গেছে। আমাদের ঈদের ব্যবসা আর হবে না। সব পুঁজি-রুজি আগুন খেয়ে নিল।’

মার্কেটের পাশের তেঁতুল তলা জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর আমরা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির শব্দ শুনে বের হয়ে দেখি মার্কেটে আগুন লেগেছে। কাপড় ও মেশিনে লাগা আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের অনেক সময় লাগে।’

শাহ্ জামাল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন জানান, ওই মার্কেটে প্রায় সবাই কাপড় ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার (২ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে মার্কেটে আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। অগ্নিকাণ্ডে মার্কেটের দুই লাইনের প্রায় ২০টি দোকান পুড়ে গেছে।

রংপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক ওহিদুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে। পরে আরও দুটি ইউনিট যুক্ত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কেউ নিশ্চিত হতে পারেননি।

রংপুর/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়