ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দুই মাস পর উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলো কর্মচঞ্চল

পঞ্চগড় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ৭ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৩:৪৬, ৭ মার্চ ২০২১
দুই মাস পর উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলো কর্মচঞ্চল

ভোর হতেই বাগানমুখী চা শ্রমিকরা। পঞ্চগড়সহ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার চা বাগানগুলো এখন কর্মচঞ্চল। দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে চা পাতা সংগ্রহ। চা কারখানাগুলোতে শুরু হয়েছে চা উৎপাদনের কার্যক্রম। 

সিলেট অঞ্চলের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদন অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে পঞ্চগড়।  ১৯৯৬ সালে সর্বপ্রথম পঞ্চগড়ে চা চাষের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয় এবং ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। পঞ্চগড়কে অনুসরণ করে চা চাষে এগিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা। 

একসময়ের পতিত গো-চারণ ভূমি এখন চায়ের সবুজ পাতায় ভরে উঠছে। আন্তর্জাতিক মানের চা উৎপাদন হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলের চা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। চা-বাগানের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেছে। সৃষ্টি হয়েছে মানুষের কর্মসংস্থান।  একেকজন শ্রমিক দৈনিক আয় করছেন ৫ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।

জানা গেছে, প্রতিবছর শীতের সময় চা বাগানে পাতার বৃদ্ধি কমে যায়। এসময় চাষিরা চা পাতা সংগ্রহ না করে গাছের ডালপালা ছেঁটে ফেলেন। বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলা হয় প্রুনিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে বাগানের পাতা ঘন হয় এবং বাড়ে। তাই জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে চা চাষিরা পাতা সংগ্রহ বন্ধ রেখে প্রুনিং করেন। এসময় কারখানাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। কারখানাগুলোর মেশিনপত্র ধোয়া মোছা করে নতুন করে প্রস্তুত করা হয়।

এদিকে, দুই মাস চা পাতা বৃদ্ধি কম হলেও মার্চ মাস থেকে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়। তাই এ অঞ্চলে চায়ের মৌসুম শুরু হয় মার্চ মাস থেকে।

চা শ্রমিকরা জানান, দুই মাস কর্মহীন সময় শেষে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তারা চুক্তিভিত্তিক বাগান থেকে চা সংগ্রহ করেন। এতে প্রতি কেজি চা সংগ্রহে তারা তিন থেকে পাঁচ টাকা পান।

চা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই মৌসুমে উত্তরবঙ্গে কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কাঁচা চা পাতার ক্রয় মূল্য এখনো নির্ধারণ করেনি চা ক্রয় কমিটি। তাই মূল্য নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় রয়েছেন চা চাষিরা। তবে আগের নির্ধারিত মূল্যেই চাষিদের কাছ থেকে চা পাতা কেনার জন্য কারখানাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চা উৎপাদন দেশে রেকর্ড স্থাপন করেছে। 

চা চাষিদেরকে সব রকম সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আবু নাঈম/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়