ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হঠাৎ কুয়াশায় শঙ্কিত আমচাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ১১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১০:৪৯, ১১ মার্চ ২০২১
হঠাৎ কুয়াশায় শঙ্কিত আমচাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শীত বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতিতে এখন ভরা বসন্ত। রাতে কিছুটা ঠাণ্ডা অনুভূত হলেও ঘন কুয়াশা পড়েনি প্রায় মাসখানেক। 

হঠাৎ গত মঙ্গলবার রাত ও বুধবার ভোরে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে এখানের প্রকৃতি। বুধবার রাতে আগের রাতের মত কুয়াশা না থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরে আবারো কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্ন ছিলো পরিবেশ।  অব্যাহতভাবে তাপমাত্রা বাড়ার পর কয়েকদিন থেকে প্রকৃতির এমন আকস্মিক পরিবর্তন দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আমচাষিরা। আমের মুকুলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

হঠাৎ কুয়াশার আস্তরণ দেখে আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। অবশ্য কৃষিবিদরা তাদের অভয় দিয়ে বলেছেন, দু'একদিন এমন হলে ক্ষতি তেমন হবে না। তবে টানা কয়েকদিন কুয়াশা পড়তে থাকলেই বিপদ।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার ফাল্গুনের আগেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির ওপরে উঠে গেছে। বর্তমানে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এ ছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গিয়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে। অর্থাৎ এবার সময়ের আগেই গরম পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। যা আমের ফলনের জন্য উপকারি।

জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আমচাষি শহিদুল হক হায়দারি জানান, ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমের মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে আমের মুকুল ঝরে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে আমের ফলনেও।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের নয়াগোলা এলাকার আমচাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, এমন কুয়াশা হঠাৎ করেই পড়ছে গত দু’রাত থেকে। এটি অব্যাহত থাকলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। মুকুল থেকে এখনই গুটিতে রূপান্তর হওয়ার সময় চলে এসেছে। এ সময়ে ঘন কুয়াশা আমের মুকুলের জন্য হন্তারক। যদিও এরই মধ্যে মুকুলে ছত্রাকনাশক স্প্রে করেছেন বলে জানান এই চাষি।

সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের আমচাষি সেজান মিয়া বলেন, ‘গত বছর করোনার কারণে আমে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠাতে না পেরে বাগানেই নষ্ট হয় বিপুল পরিমাণ আম। এমনকি সার, কীটনাশক প্রয়োগ করার খরচ পর্যন্ত ওঠেনি। আর এবার হঠাৎ কুয়াশা আবারো ক্ষতির শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সময় প্রায় ৯৯ শতাংশ গাছেই আমের মুকুল চলে এসেছে। কিছু কিছু গাছে আমের গুটিও আসতে শুরু করেছে। যেসব গাছে গুটি এসেছে সেগুলোতে তেমন ক্ষতি না হলেও কুয়াশায় মুকুলের ক্ষতির সম্ভবনা বেশি।’

উল্লেখ্য, জেলায় এবার ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আড়াই লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

জাহিদ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ