বগুড়ায় অপহরণের পর শিশু হত্যা: আসামি গ্রেপ্তার
বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বগুড়ার শিশু হানজালাকে (৬) অপহরণের পর হত্যা মামলার আসামি মনজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাত ৮টায় পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নিশুপাড়া গ্রাম থেকে মনজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। মনজু ঐ গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।
গত ২১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাবতলী উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের একটি ডোবা থেকে স্কচ টেপ পেঁচিয়ে-পলিথিনে মুড়িয়ে ইট বেঁধে ডুবিয়ে রাখা অবস্থায় হানজালার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে শিশু হানজালা বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওইদিনই গাবতলী থানায় জিডি করা হয়।
শিশু হানজালা (৬) গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া গ্রামের পিন্টু প্রামানিকের ছেলে। অপহরণের পর শিশুর মা তাসলিমা বেগমকে ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মনজু জানিয়েছে মাদক সেবনের টাকা সংগ্রহ এবং ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সে ঘটনার বেশ কয়েক দিন আগে অপহরণের পরিকল্পনা করে। হানজালার সঙ্গে মনজুর প্রতিবেশি মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক ছিল। হানজালা প্রায়ই মনজুর ওষুধের দোকানে যেত। গত ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে মনজু নিশুপাড়ায় তার ওষুধের দোকানে বসে ইয়াবা সেবন করছিল। এসময় হানজালা তার দোকানে যায়। হানজালাকে দোকানের ভেতরে ঢুকিয়ে শাটার বন্ধ করে দেয় মনজু।
‘হানজালাকে তার মোবাইল ফোন দিয়ে ইয়াবা সেবন করতে থাকে মনজু। এসময় হানজালাকে অপহরণের বিষয়টি মাথায় আসে তার। পরে সে হানজালার মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে বেঁধে ফেলতে চেষ্টা করে। কিন্তু হানজালা চেঁচামেচি করলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। পরে শিশুটির পুরো শরীর স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দোকানের একটি তাকে রেখে দেয়।
‘হত্যার কয়েক ঘণ্টা পর বাড়ি ফেরে মনজু। পরে রাতের সাড়ে ৩টায় মনজু আবারও দোকানে ফেরে। হানজালার লাশটি পলিথিনে মুড়িয়ে, বস্তায় ভরে তিনটি ইট বেঁধে পাশের একটি পুকুরে লুকিয়ে রাখে। এরপর ১৯ ডিসেম্বর বগুড়ার পৌরপার্ক থেকে আনন্দ কুমার দাস নামের এক পঙ্গু ভিখারিকে টাকা দিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে ভিখারীর আইডি কার্ড ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে সিম কেনে। সেই সিম ব্যবহার করে হানজালার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে মনজু। মুক্তিপণ না পেয়ে গত ২১ জানুয়ারি সে নিজেই হানজালার মাকে ফোন করে ছেলের লাশ কোথায় রাখা আছে তা জানিয়ে দেয়।”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হত্যা রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজছিলো। বিভিন্ন তথ্য ও তদন্তের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মনজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগামীকাল শনিবার (২০ মার্চ) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।’
এনাম আহমেদ/সনি
আরো পড়ুন