ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

 ‘মেম্বারের হাত-পাও ধরিছি, তাও হামাঘরে বাড়ি ভ‌্যাঙে দিসে’

ধামইরহাট (নওগাঁ) সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ২১ মার্চ ২০২১   আপডেট: ০২:৫১, ২২ মার্চ ২০২১
 ‘মেম্বারের হাত-পাও ধরিছি, তাও হামাঘরে বাড়ি ভ‌্যাঙে দিসে’

নওগাঁর ধামইরহাটে মো. আবু মুছা নামে এক ইউপি সদস‌্যের বিরুদ্ধে অসহায় এক কৃষকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী কৃষকের মেয়ে মুনিরা বেগম বলেছেন, ‘মেম্বারের হাত-পাও ধরিছি, তাও হামাঘরে বাড়ি ভ‌্যাঙে দিসে।’

শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের ভেড়ম সোনাদিঘী নামক এলাকায় ঘটে।

শনিবার (২০ মার্চ) বিকেলে এবিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক ওই ইউপি সদস্যসহ মোট ১০ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

রোববার (২১ মার্চ) সকালে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মমিন ঘটনার সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মো. আবু মুছা উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জোতভুক্ত ২৯ শতাংশ জমিতে কৃষক মো. আবু কালাম দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি ওই কৃষকের বাড়ির মাটির দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইট দিয়ে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রাচীরের পাশে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ১০ ফিটের একটি রাস্তা রয়েছে। রাস্তা থেকে ৩ ফিট দুরত্ব বজায় রেখে ভুক্তভোগী ওই কৃষক প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ওইদিন রাজমিস্ত্রি নবনির্মিত প্রাচীরের মাঝে ৪ ফিট দরজা রেখে উপরে উভয় পাশের ৩৬ ইঞ্চির একটি সানসেট নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

এসময় ইউপি সদস্য আবু মুছা, আব্দুল মজিদ, আব্দুল ছোবাহানসহ আরও ১০-১২ জন মিলে লোহার শাবল, হাম্বুরসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই কৃষকের নির্মাণাধীন প্রাচীরের সানসেট জোরপূর্বক ভেঙে ফেলেন। এছাড়াও ওই কাজ বন্ধ করতে মিস্ত্রিসহ বাড়ির নারীদের জীবন নাশের হুমকি দেন।

ভুক্তভোগী কৃষক মো. আবু কালাম বলেন,  ‘রাস্তা থেকে ৩ ফিট দূরত্বে প্রাচীর নির্মাণ করেছি। তাহলে আমার প্রাচীরসহ এই সানসেট কিভাবে রাস্তার মধ্যে পড়ে। আমার বাড়ির পাশেই আরও একটি বাড়ি রয়েছে। সানসেটসহ সেই বাড়ির পুরো প্রাচীর রয়েছে রাস্তাটির ভেতরে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মো. আবু কালামের মেয়ে মুনিরা বেগম বলেন, ‘আমি আর আম্মা ছাড়া তকন বাড়িত কেউ আছিলো না। হঠাৎ মেম্বার আবু মুছা বাড়ির সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করবা শুরু করে। এরপর প্রাচীরের সানসেট ভাঙবা শুরু করে। অনেক কান্দিছি, মেম্বারের হাত-পাও ধরিছি,  অনেক অনুরোধ করিছি, বলেছি আমরা অনেক গরীব। এভাবে আমাদের বাড়ি ভাঙেন না। তিনি কোনো কথা না শুনে দলবল নিয়ে এভাবে ভ‌্যাঙ্গে দিলো। আমি বিচার চাই।’

এবিষয়ে ইউপি সদস্য আবু মুছা জানান, গত মাসে স্থানীয়রা মিলে এক বৈঠকে ওই কৃষককে শুধু প্রাচীর নির্মাণের কথা বলা হয়েছিল। তার প্রাচীর নিজস্ব জায়গাতে রয়েছে এবং প্রাচীরের সানসেট রাস্তার ভেতরে পড়েছে সেজন্য এলাকাবাসীসহ সানসেটটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মমিন জানান, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। সরোজমিনে গিয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ধামইরহাট/অরিন্দম/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়