ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ 

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ৩১ মার্চ ২০২১  
দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ 

অভিযুক্ত আবু তাহের

কক্সবাজারের রামুতে দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় এবং যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানসহ শ্বশুর-শাশুড়িকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আবু তাহের (২৮) নামে এক ব‌্যক্তির বিরুদ্ধে।

আবু তাহের রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং নয়াপাড়ার বাসিন্দা জাফর আলমের ছেলে। 

এ ঘটনায় গত সোমবার (২৯ মার্চ) বাদী হয়ে স্বামী ও শ্বশুরকে আসামি করে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহবধূ রাশেদা বেগম।

ভূক্তভোগী গৃহবধূ রাশেদা বেগম টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ এলাকার গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। 

রাশেদা বেগম জানান, পাঁচ বছর আগে তার সঙ্গে সামাজিকভাবে আবু তাহেরের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সাড়ে তিন বছর বয়সী ও ১০ দিন বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। 

প্রথম কন্যাসন্তান জন্মের ২/৩ বছর পর থেকে স্বামী আবু তাহের যৌতুক হিসেবে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য তাকে চাপ দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে তাকে শারীরিক নির্যাতনও চালায় আবু তাহের। গত ১৯ মার্চ তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। 

দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ায় গত রোববার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাশেদাসহ তার বাবা-মাকে মারধর করে আবু তাহের। এতে নবজাতক সন্তানও আহত হয়। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।  

রাশেদা বেগম বলেন, ‘দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর আমাকে দায়ি করে। শ্বশুরের ইন্ধনে ও উস্কানিতে আমার স্বামী নির্যাতন করে।’

রাশেদার বাবা গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘যৌতুকের দাবিতে আমার মেয়ের ওপর আবু তাহের দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। কিছুদিন আগে আরেকটি কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ায় আবারও মারধর করে। খবর পেয়ে আমার স্ত্রী মেয়েকে দেখতে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করে জামাই তাহের। গত রোববার (২৮ মার্চ) মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গেলে আমাকেসহ সবাইকে আরেক দফা মারধর করে ঘরে আটকে রাখে আবু তাহের। পরে আমারদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে উদ্ধার করে।’

এদিকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে আবু তাহের বলেন, ‘যৌতুকের দাবি এবং কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় স্ত্রীসহ শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে মারধর করার অভিযোগ সত্য নয়। আমার স্ত্রী এখনও বাপের বাড়ি টেকনাফের ঠিকানায় ভোটার। কয়েকদিন আগে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্টকার্ড বিতরণ উপলক্ষে বাপের বাড়ি যেতে না দেওয়ায় স্ত্রীসহ শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে আমার বাবার সঙ্গে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির বাক-বিতণ্ডা হয়। সেই ঘটনাকে ভিন্নভাবে ঘুরিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনায় ভূক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ঘটনাটি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ নিয়ে। বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা করার ব‌্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ 

আজমিরুজ্জামান জানান, যেহেতু পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এতে বাদী সম্মতি প্রকাশ করলে মামলা নথিভূক্ত করা হবে।

সুজাউদ্দিন রুবেল/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়