ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

তুলশী গঙ্গা নদীর সেতুতে ভাঙন, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

শামীম কাদির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৫, ১ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১১:১৮, ১ এপ্রিল ২০২১

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে তুলশী গঙ্গা নদী খননের সময় সেতুর তলদেশে অতিরিক্ত মাটি তোলার কারণে সেতুর পিলারে ফাটল দেখা দেয়। এতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরেছে সেতুটি।

এতে জেলার পাঁচবিবি- গাইবান্ধা সড়কে সকল ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ওই সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুকনো মৌসুমে পানি ধরে রাখতে ও বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ত্বত্তাবধানে খনন কাজ চলছে তুলশীগঙ্গা নদীতে। খনন চলাকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি- গাইবান্ধা সড়কের ফিচকার ঘাটে সেতুর তলদেশ থেকে অতিরিক্ত মাটি তোলায় ফাটল দেখা যায় সেতুর পিলারে। ভাঙনের আশঙ্কায় ওই সেতু দিয়ে সকল যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে জেলার সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে গাইবান্ধা, রংপুর, বগুড়া, ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা করা হলেও তা দুর্বল হওয়ায় সামান্যতম ভোগান্তিও কমেনি জনসাধারণের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি, দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতাকে দায়ী করে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান ভুক্তভোগীরা। সেতুটি অকেজো হওয়ার কারণে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হওয়ার পাশাপশি এখানকার কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় যারপর নাই সমস্যায় রয়েছেন এ অঞ্চলের হাজার হাজার বাসিন্দা। এ অবস্থা উত্তরণে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার জনসাধারণ।

ফিচকারঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আজাদ বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড যখন তুলশী গঙ্গা নদী খনন করে, তখন তাদেরকে নদীর পাড়ে মাদ্রাসা ও মসজিদ আছে। তাই সেতুর তলদেশের মাটি খনন না করা হয় —এই বিষয়টি জানিয়েছিলাম।—এলাকাবাসী সকলেই এ বিষয়ে অনুরোধও করেছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের কথায় পাত্তা দেয়নি।’

এলাকার শিক্ষক আহসান হাবিব, ব্যবসায়ী মোকলেসার রহমান, ট্রাক ড্রাইভার মঞ্জুরুল ইসলাম, বাসচালক শাহিন আলম ও ভ্যানচালক লিটনসহ যানবাহন চালকরা আরও বলেন, ‘এই পথ দিয়ে যাতায়াত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ২০/২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে জয়পুরহাট শহর হয়ে তাদেরকে যানবাহন নিয়ে চলাচল করছেন। এতে খরচ ও সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলার কারণে এমন জনদুর্ভোগের অভিযোগ উঠলেও ভিন্ন কথা বললেন জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাদেুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের স্বার্থে নদীর সেতুতে আগে একটা রিং বার দিয়েছিলাম, কিন্তু প্রবল পানির স্রোতে সেই রিং বার ভেঙে সেতুর পিলারে আঘাত করে। পুরাতন এই সেতুর পিলারগুলি ইটের গাঁথুনীতে তৈরি। তাই পানির স্রোতে পিলারগুলি ভেঙে যায়। এতে করে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি, সেতুর পাশ দিয়ে ডাইভারশন করা হয়েছে। আগামী বর্ষার আগে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হবে।’

এদিকে, এমন দুর্ভোগের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষই দায়ী বলে ইঙ্গিত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ও পরিস্থিতি বিবেচনায় শীঘ্রই দুর্ভোগ লাঘবের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ জয়পুরহাট এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কথা বললে জয়পুরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিন জানান, যে কোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পরতে পারে। এ ব্যাপারে যত দ্রুত সম্ভব সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গাফিলতির জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

জয়পুরহাট/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়