ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

লকডাউনে তরমুজ চাষিরা হতাশ

বরগুনা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৭, ৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১২:২৩, ৫ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনে তরমুজ চাষিরা হতাশ

বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও লকডাউনে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।

তাদের চোখে ছিল বিগত বছরের লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। লকডাউনে সে আশা ভঙ্গ হতে চলেছে বলে মনে করছেন তরমুজ চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

লকডাউনের কারণে গত বছর তরমুজ কম দামে বিক্রি হওয়ায় অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের। অনেক চাষি তরমুজ বিক্রি করতে না পারায় ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে। এ বছর একই পরিস্থিতি দেখে সরকারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তরমুজ বিক্রির দাবি জানিয়েছেন তারা।

আমতলী কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলীতে তরমুজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯শ ৯০ হেক্টরে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৪শ ৯০ হেক্টর বেশি জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম থাকায় বিগত বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছিলেন চাষিরা। কিন্তু সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউনের ঘোষনায় চাষিরা ভেঙে হয়ে পরেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও একই অবস্থা হবে বলে ধারণা করছেন তারা।

লকডাউনের কারণে এ অঞ্চলের তরমুজ ঢাকা, গাজীপুর, বগুড়া, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, টাঙ্গাইল ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে বলে ধারণা চাষি ও পাইকারদের।

আমতলীর আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের তরমুজ চাষি আলমগীর আকন, কামাল হাওলাদার, শহীদুল গাজী, মাহবুব মাতুব্বর, লিমন গাজী ও মাহাতুল মল্লিক এরা সবাই হতাশার কথা ব্যক্ত করলেন।

বললেন, আবার লকডাউন এসেছে। কি হয় আল্লাহই জানে। এ বছর আশা করেছিলাম ভালো দামে তরমুজ বিক্রি করবো কিন্তু তা হয় কিনা জানিনা। লকডাউনের কারণে গত বছর তরমুজ কম দামে বিক্রি করেছি। বিক্রি করতে না পারায় অনেক তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে। এ বছর এমন অবস্থা হলে সরকারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তরমুজ বিক্রির দাবি জানান তারা।

কুকুয়া ইউনিয়নের চুনাখালী গ্রামের ওহাব মৃধা, বাহাউদ্দিন হাওলাদার ও রাজ্জাক মৃধা বলেন, গত বছর লকডাউনের কারণে পাইকাররাও তরমুজ কিনেননি। তাই কম দামে বেচতে হয়েছে। এ বছরও লকডাউন থাকলে তরমুজ নিয়ে বিপাকে পরতে হবে।

আমতলী গাজীপুর বন্দরের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. সোহেল রানা বলেন, লকডাউন থাকলে পরিবহন সমস্যায় দুর-দুরান্ত থেকে ব্যাপারিরা তরমুজ কিনতে আসবেন না। এতে স্থানীয় বাজারে তরমুজের চাহিদা কমে যাবে। ফলে দামও কমবে। সব মিলিয়ে তরমুজ নিয়ে চাষিরা মারাত্মক সমস্যায় পড়বেন। লকডাউনের খবর শুনেই ক্ষেত থেকে তরমুজ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, লকডাউনের কারণে তরমুজ পরিবহন ও বিক্রিতে সমস্যা হলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমতলীর তরমুজ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হবে। কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেই দিকে যথাযথ খেয়াল রাখা হবে।

কাশেম/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়