ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘আগে খাবার দেউক, তারপর লকডাউন’

রংপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০২:২১, ৬ এপ্রিল ২০২১
‘আগে খাবার দেউক, তারপর লকডাউন’

সারাদেশের মতো রংপুরেও লকডাউন চলছে। নির্দেশনা মোতাবেক গণপরিবহন- বাস, ট্রেন, লঞ্চ, প্লেন চলাচল বন্ধ থাকার কথা। তবে শাপলা চত্বর ও মর্ডান মোড় এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি দূর পাল্লার বাস চলাচল করতে দেখা গেছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে। 

তবে লকডাউনের প্রথম দিনেই হাহাকার করতে দেখা গেছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে।

মর্ডান স্টান্ডের সেলুন ব্যবসায়ী শাহিন। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘মোর বাড়িত তিনটা ছেলে-মেয়ে। মাস গেইলে বাসা ভাড়া আর কারেন বিল দেওয়া নাগে তিন হাজার ট্যাকা। সরকার লকডাউ দিছে বড়লোক ব্যাবসায়ী গুলাক আরো বড়লোক করব্যার জন্যে। আর হামার মতো গবির মানুষ গুলাক না খায়য়া মারি ফেলবার জন‌্যে। এল্যাও মানুষ মাক্সে ঠিক মতোন পরে না আর খালি লকডাউন। হামাক আগে খাবার দেউক তারপর লকডাউন।’

মর্ডান মোড়ে দেখা হয় রিকশা চালক আমজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঘরে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে আর এক ছেলে আছে। তাদের খরচ আর সংসার চালাতে দিনভর হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। সরকার আজ থেকে লকডাউন দিয়েছে। পেটতো আর লকডাউন মানে না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভাড়া মেরেছি মাত্র ষাট টাকা। রোদে ঘুরেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তার ওপর পুলিশের চাপ। এখন আমরা কী করবো? এসব কী আর সরকার বুঝবে? আমাদের না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নাই।’

লালবাগ এলাকার বেকারি ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া জানান, লকডাউনে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। এই ব্যবসার ওপর ১২টি পরিবারের জীবিকা নির্ভর করে। সরকার লকডাউন না দিয়ে যদি স্বাস্থ্যবিধি মানতে আরও কঠোর হতো, পাশাপাশি ভ্যাকসিন গ্রহণে বাধ‌্যবাধকতা আরোপ করতো তাহলে সংক্রমণের হার কমে আসতো। ব্যবসা বাণিজ্যও স্বাভাবিক থাকতো।

রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের সহকারী কমিশনার ফরহাদ জানান, লকডাউন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে পুলিশ। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে বাইরে বের না হয়- সে বিষয়ে জনসচেতনতামূলক মাইকিংও করা হচ্ছে।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে (২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল) রংপুর জেলায় ৫৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৩১ জেলায় করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রংপুরের অবস্থান ২৭ নম্বরে।

গত বছরের ৪ এপ্রিল রংপুর জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এক বছরে তা চার হাজার ২২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৭৩ জন।

আমিরুল/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়