ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সালথার ঘটনায় নিহতের সংখ‌্যা বেড়ে ২, আরও ৪ মামলা

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ৮ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৯:৩৯, ৮ এপ্রিল ২০২১
সালথার ঘটনায় নিহতের সংখ‌্যা বেড়ে ২, আরও ৪ মামলা

ফাইল ছবি

ফরিদপুরে সালথায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে নিহতের সংখ‌্যা বেড়ে দুজন হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় পৃথকভাবে আরও চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

এ নিয়ে সালথা থানায় মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হলো। এসব মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৬ হাজার ৮০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এছাড়া হামলার ঘটনা তদন্তে তিন সদস‌্যের দুটি কমিটি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত দুজন হলেন- রামকান্তপুর এলাকার জুবায়ের হোসেন (১৮) ও ভাওয়াল ইউনিয়নের দরজাপুরুরা গ্রামেরমিরান মোল্যা (৩৫)। সে আব্দুর রব মোল্যার ছেলে। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন মিরান।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা জানান, হামলার ঘটনায় বুধবার রাতে (৭ এপ্রিল) চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ‌্যে মুক্তিযোদ্ধা অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা বাচ্চু মাতুব্বর বাদী হয়ে ২৫ নামের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

সালথা ভূমি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় নিরাপত্তা প্রহরী সমীর বিশ্বাস বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও চার হাজার জনকে আসামি করে অপর একটি মামলা দায়ের করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মচারী হাসমত আলী বাদী হয়ে ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও চার হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া ভূমি অফিসের গাড়ি চালক সাগর সিকদার বাদী হয়ে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও চার হাজার জনকে আসামি করে অপর আরও একটি মামলা দায়ের করেন।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাতে সালথা থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত চার হাজার জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। 

এ ঘটনায় নতুন আরও ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এনিয়ে মোট ২৮ জনকে আটক করা হলো। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, সালথার তাণ্ডবের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যে করে দুটি কমিটি করা হয়েছে। এর একটি প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. তাসলিমা আলীকে। অপর কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম মোল্যাকে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই দুই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ফরিদপুরের সালথায় গুজব ছড়িয়ে তাণ্ডব চালানোর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগের পরিদর্শন দলে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুর রহমান, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দিপু মনি, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল ও মির্জা আজম।

এসময় প্রতিনিধি দলটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে উপজেলায় একটি প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন। 

সভায় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, ‘এ তাণ্ডবের ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র রয়েছে। এরা আওয়ামী লীগকে পতনের ষড়যন্ত্রও করছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তদন্ত করে তাদের খুঁজে বের করা হবে।’

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৫ এপ্রিল) রাতে লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে জনতার সঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও তার সহকারীদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে গুজব রটিয়ে উপজেলা পরিষদ, থানা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

পরে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ৫৮৮ রাউন্ড শটগানের গুলি, ৩২ রাউন্ড গ্যাস গান, ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড এবং ৭৫ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। এতে আহত হন প্রায় শতাধিক। গুলিবিদ্ধ তিন জনকে ঢাকা ও ফরিদপুর মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় এখনও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

 

আরও পড়ুন > সালথায় পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ: ৪ হাজার জনকে আসামি করে মামলা

গোপালগঞ্জ/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়