ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিলেটের হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১১ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০৭:৫৬, ১১ এপ্রিল ২০২১
সিলেটের হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই

সিলেটে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। এতে রোগীর চাপ বেড়েছে করোনা ডেডিকেটেড শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। চাপ পড়েছে সাধারণ শয্যায়, ফাঁকা নেই আইসিইউ শয্যা। আর করোনা হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা খালি না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের।

শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে গত বছরের ৫ এপ্রিল থেকে কার্যক্রম শুরু হয়। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে ৮৪টি সাধারণ শয্যা ও ১৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। ১৬ আইসিউ শয্যার মধ্যে ১৪টিতে রোগী ভর্তি করা হয়, আর দুই শয্যা ডায়ালাইসিস এর জন্য ফাঁকা রাখা হয়। বর্তমানে ১৪টি আইসিইউ শয্যায় ১৪ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন, এ কারণে নতুন রোগী ভর্তির কোনো স্থান নেই। এছাড়া, সাধারণ ৮৪টি শয্যার কোভিড সাসপেক্টেড ওয়ার্ডও পুরোপুরি ভরে গেছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আর.এম.ও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানান, ‘গত বছরের শেষের দিকে কয়েকদিন এবং চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা কম থাকায় রোগীর সংখ্যা কম ছিল। তবে মার্চের শেষের দিকে এসে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও বেড়ে যায়।’ এখন এতো রোগী আসছে যে, এর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

তিনি জানান, ‘সাধারণ ওয়ার্ডের ভর্তিকৃত রোগীর শারীরিক অবস্থা কিছু উন্নতি হলে তাদের বাড়িতে হোম আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয়া হয়, পরে শয্যা খালি থাকা সাপেক্ষে পজেটিভ রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। আর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রিটিকাল কন্ডিশনের রোগী ছাড়া কাউকে আইসিইউতে নেয়া হয়নি। তবে শয্যায় সংকটের কারণে নতুন করে আইসিইউতে কোন রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে না।’

সরকারি শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ছাড়াও সিলেটে বেসরকারিভাবে চালু করা মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৮টি এবং নর্থইস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এ দুই হাসপাতালেরও আইসিইউ শয্যার একটিও খালি নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে নগরীর দরগাহ গেইটে বেসরকারি নুরজাহান হাসপাতালে ১১ শয্যার আইসিইউ ইউনিট নিয়ে ২৩ শয্যার পৃথক করোনা ইউনিট শনিবার (১০ এপ্রিল) থেকে চালু করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক শাফি মোহাম্মদ নাহিয়ান এক বিজ্ঞপিতে জানান, ‘সিলেটে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া এবং ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়াতে হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে।’

সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. নূরে আলম শামীম জানান, ‘সিলেটে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ার কারণে শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতার ফলে বাড়ছে সংক্রমণ। এটা উদ্বেগজনক, এজন্য ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সচেতনতা জরুরি।’

তিনি জানান, ‘আইসিইউ সুবিধা বাড়াতে ইতোমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। তবে অক্সিজেনের মাধ্যমে সাধারণ শয্যার রোগীদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব, তাই তারা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলায় জোর দিচ্ছেন। পাশাপাশি করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে আরও তৎপরতা বাড়ানো হলে নগরীর হাসপাতালগুলোতে চাপ কমবে বলে মনে করেন তিনি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর ১৫ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। শনিবার (১০ এপ্রিল) নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১০১ জনসহ এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৭০১ জন। শনাক্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩০ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫০৭ জন।

নোমান/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়