ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

লকডাউনে গোপালগঞ্জে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না কেউ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৪, ১২ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৫:৪৫, ১২ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনে গোপালগঞ্জে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না কেউ

দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। এর থেকে বাদ যায়নি গোপালগঞ্জও। প্রতিদিনই নতুন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে এই জেলাতে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে গোপালগঞ্জে সামাজিক দূরত্বসহ সরকারি নির্দেশনা মানছেন না কেউ। হাট, বাজার, আলিগলিতে এখনও মানুষের ভিড় আছেই। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সোমবার (১২ এপ্রিল) জেলা শহরের লঞ্চঘাট, বাজার রোড, নতুন বাজার, চৌরঙ্গসহ কয়েকটি স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রথম দফা শেষে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনে জেলার সকলেই প্রায় নির্বিঘ্নে চলাচল করছেন।  জেলার হাট-বাজার, আলি-গলি, চায়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এসময় তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা মাস্ক পযর্ন্ত পরিধান করছেন না।

এক সপ্তাহের লকডাউন শেষ হবার পর জেলা শহরের বিপণী বিতানগুলো খোলার পর মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি দোকানগুলোতে। এক একজন অন্যজনের শরীর ঘেঁষে কেনাকাটা করছেন।

ক্রেতা মহির সিকদার, মহরম সিকদার, কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফায় আবারো লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য আমারা এখন বাজার ও দোকানে ভিড় করেছি কেনাকাটা করতে। তবে অনেকেই মাস্ক পরিধানসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না। এমনকি দোকানগুলোতেও সামাজিক দূরত্বরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

দোকানদার সঞ্জয় সাহা, সদা সাহা, লিটন সাহা, লিখিল সাহাসহ অনেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘দ্বিতয়ি দফায় লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারা কেনাকাটার জন্য হুমড়ি খেয়ে দোকানে আসছে। তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বলা হলেও মানছেন না। আমরা ব্যবসায়ীরা সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার চেষ্ঠা করলেও ক্রেতাদের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।’

গোপালগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু বলেন, ‘শহরের থেকে গ্রামের চিত্র ভিন্ন। গ্রাম থেকে শহরে মানুষজন আসছেন। তারা যদি সচেতন হয় তাহলে করোনাভাইরাস কম ছড়াবে। মাস্ক পড়াসহ সামাজিক দূরত্ব যে বজায় রাখে সাধারণ মানুষের প্রতি আমি আহবান জানাচ্ছি।’

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেন, ‘গোপালগঞ্জ সরকার প্রধান, বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনার জন্মস্থান। জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দশনা বাস্তবায়ন করছে। এন্য জন্য নেতা কর্মদের সজাগ থাকার জন্য বলা হয়েছে।’

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘দেশের মানুষ খুব শিক্ষিত না হওয়ায় তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাদেরকে সচেতন করাটা আমাদের বড় দায়িত্ব। এটা শুধু প্রশাসনের জন্য না, সমাজের সকলের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ মাস্ক পরিধান করে সেজন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে অভিযান চালানো আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, আমাদের উদ্দেশ্য হল মানুষকে মাস্ক পরিধানে বাধ্য করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করানো।’

এদিকে, করোনার প্রার্দূর্ভাব ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক লাখ মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। সোমবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় মাস্কবিহীন মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। এসময় জেলার ৫ উপজেলার ৬৭ ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভা এলাকায় একযোগে এই মাস্ক বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

বাদল/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়