ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মনোয়ারাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেবেন দীনবন্ধু প্রামাণিক?

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১০, ১৩ এপ্রিল ২০২১  
মনোয়ারাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেবেন দীনবন্ধু প্রামাণিক?

দীনবন্ধু প্রামাণি ওরফে দ্বীন ইসলাম

বিয়ে করেও স্ত্রীর অধিকার না দেওয়ায় টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ‌্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধু প্রামাণি ওরফে দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৯ মার্চ টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে  ওই শিক্ষকের দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা সিদ্দিকী এই মামলা দায়ের করেন।  

 এই প্রসঙ্গে মনোয়ারা সিদ্দিকী বলেন, ‘২০১৭ সালে টাঙ্গাইল শহরের একটি মার্কেটে দীনবন্ধু প্রামাণিকের সঙ্গে পরিচয় হয়। প্রামাণিক দোকান কেনার কথা বলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে আমাদের মধ‌্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  সম্পর্কে  সুযোগে দার্জিলিংয়ে যাই তার সঙ্গে। সেখানে আমার চিকিৎসা করাই। এছাড়া একবার কলকাতায় ঘুরতেও যাই তার সঙ্গে।’

মনোয়ারা বলেন, ‘ইতোমধ‌্যে সম্পর্ক আরও গভীর হলে আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দীনবন্ধু প্রামাণিক এফিডেবিট করে ধর্মান্তরিত হয় ইসলামধর্ম গ্রহণ করেন।  এ সময়  দ্বীন ইসলাম নাম গ্রহণ করেন। এরপর ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাভার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাজি অফিসে সাড়ে চার লাখ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ে হয়।’

দীন বন্ধু ওরফে দ্বীন ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রামাণিক বিয়ের আগে-পরে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার ধার নেন। এছাড়া, ভারতের শিলিগুড়িতে জায়গা কেনার কথা বলে চার লাখ টাকা এবং টাঙ্গাইল শহরের আদি টাঙ্গাইলে বাড়ি তৈরির কথা বলে আরও তিন লাখ টাকা ধার দেন। এর বাইরে আমার ছেলের কাছ থেকে দুই চেকের মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ টাকা নেন তিনি।’

মনোয়ারা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমার জমানো সাড়ে সাত লাখ টাকা ও সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণ নিয়েছেন দ্বীন ইসলাম। বিয়ের পর বেশ কিছুদিন নিয়মিত তিনি খোঁজখবর রাখলেও এখন খোঁজ নিচ্ছেন না। ফোন করলেও রিসিভ করেন না। তার বাড়িতে গিয়ে পাই না। আমি অধিকার আদায়ের জন‌্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার জমানো টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নেওয়ায় আমি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি।’ 

স্থানীয়-সূত্রে জানা গেছে, দীনবন্ধুর বাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ভূষণ্ডি গ্রামে। পঁচিশ বছর আগে পুস্পিতা প্রামাণিকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। দুই ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবন। ২০০১ সালে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ‌্যালয়ে যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালে  ধর্মীয় শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান।  এদিকে, দ্বিতীয় বিয়ে করতে ধর্মান্তর হয়ে দীনবন্ধু থেকে দ্বীন ইসলাম হওয়ায় এলাকায় সমালোচনার ঝড়  উঠেছে।  প্রথম স্ত্রী হিন্দু, দ্বিতীয় স্ত্রী মুসলিম।  মনোয়ারাকে দ্বিতীয় স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকার করায় তার ধর্মীয় পরিচয় নিয়েও  প্রশ্ন তুলছে এলাকাবাসী। এরপর গত ২৬  মার্চ বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে অবরুদ্ধ হন ওই শিক্ষক। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। 

জানতে চাইলে মনোয়ারাকে বিয়ের কথা স্বীকার করেন দীনবন্ধু প্রামাণিক ওরফে দ্বীন ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মনোয়ারা তার দিক থেকে আইনিভাবে স্ত্রীর অধিকার পেতে প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে। শিগগিরই বিষয়টি মীমাংসা হচ্ছে।’ তবে. টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।  

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। দুজনকে ডেকে সমাধান করে দেওয়া হবে।’ 
 

আবু কাউছার/এনই/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়