ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পার্বত্য এলাকায় পালিত হচ্ছে বিজু উৎসব

শিরীন সুলতানা অরুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:০২, ১৩ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৬:৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২১
পার্বত্য এলাকায় পালিত হচ্ছে বিজু উৎসব

পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু, সাংক্রাই, সাংক্রান। মনে হতে পারে উৎসবটির এ এক দীর্ঘ নাম, নতুবা ভিন্ন ভিন্ন একেকটি উৎসব। প্রকৃতপক্ষে নামে ও পরিসরে পার্থক্য থাকলেও বিষয়বস্তুর আলোকে তথা অন্তর্নিহিত তাৎপর্যে এটি অভিন্ন উৎসব।

চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজন তিনদিন বিজু পালন করেন। গতকাল ছিলো ফুল বিজু আজ ছিল মুল বিজু এবং আগামীকাল হবে গইজ্জা পইজ্জা বিজু।

বিজু উপলক্ষে রাঙামাটির বাসিন্দা দীপা চাকমা বলেন, ‘গত বছর বিজু করতে পারিনি খুব মন খারাপ ছিল কিন্তু এই বছর বেশ মজা করে বিজু পালন করছি খুব ভালো লাগছে।’

স্মরণাতীত কাল থেকে তারা এই উৎসব পালন করে আসছে। কালের পরিক্রমায়, আর্থ-সামাজিক বিকাশের গতিধারায় এটি বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। সার্বজনীন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, অথচ স্বতন্ত্র ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই উৎসবটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আদিবাসী জুম্মদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ও অধিকাংশ জাতিগোষ্ঠী এই উৎসবটি অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে লালন ও পালন করে থাকে। আর এই উৎসবে সামিল হয় জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ।

পাজন রান্না ও খাওয়ার প্রচলন হয়েছে হাজার বছর আগে।  জুমের সব সবজি মিশিয়ে তরকারি রান্না করাকে পাজন বলা হয়। পাজন শব্দটি জুম থেকে এসেছে। আগে পাহাড়িরা সবাই জুমিয়া ছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন, জুমে যেসব সবজি উৎপাদিত হয় সেসবের ঔষধি গুণ রয়েছে।  সববয়সের নারী-পুরুষদের বলা হতো পাজন খেলে শারীরিকভাবে সুস্থতা ও রোগব্যাধিমুক্ত থাকা যায়। সেজন্য বছর শেষে নতুন বছরে সুস্থ থাকার জন্য পাজন খাওয়া হয়।

বিজুর দিনে পাহাড়িদের আপ্যায়নের সময় প্রধান পদ পাজন। বলা হয় কমপক্ষে ২২ রকম সবজি ব্যবহার করতে হয়। অনেকে ৬০/৭০ এমন কী ১০০ রকমের সবজিও ব্যবহার করেন। কমপক্ষে সাতটি বাড়িঘরে পাজন খাওয়া আব্যশক বলে মনে করা হয়। পাজন পাহাড়িদের বেশ জনপ্রিয় এবং বিভিন্ন সময় পাজন রান্না প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়।

রাঙামাটি/ সিনথিয়া

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়