ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘মুই অ‌্যাহনও জ‌্যাঁতা, মরি নাই’

ইমরান হোসেন, বরগুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৩, ১৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০২:১০, ১৬ এপ্রিল ২০২১
‘মুই অ‌্যাহনও জ‌্যাঁতা, মরি নাই’

আবু ছালেহ

‘মুই অ‌্যাহনও জ্যাঁতা, মরি নাই। কিন্তু ভোটার তালিকায় মোর নাম নাই। তালতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাইয়া খুঁইজ্জা দেহি মুই মরে গেছি।  নির্বাচন অফিসের স্যারে গো হাত-পা ধরলাম। কাম হইলো না।’ বুধবার (১৪ এপ্রিল) এভাবে নিজের দুর্ভাগের কথাগুলো বলছিলেন, বরগুনার তালতলীল বড়বগী ইউনিয়নের নাওভাঙা গ্রামের ৪১ বছর বয়সী আবু ছালেহ। 

আবু ছালেহ বলেন, ‘জেলা নির্বাচন অফিসে যাইয়াও কয়েকদিন হ্যাগো হাত-পা ধরছি। স্যারে গো কইলাম, মুইতো জ্যাতা, মোরে মরার তালিকায় দিছেন ক্যা? হেইরপরও কাম হইলও না। গরিব মানু মুই। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাইয়া তিন বেলা ভাত খাই। ত্রাণের চাউল না পাইয়া পরিষদে খোঁজ লইয়া দেহি, মুই মরা!’
 
রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাকালে আবু ছালেহ জানান, প্রায় এক বছর ধরে ভিজিডি চালের সহায়তা পান না তিনি। এর আগে প্রত্যেকবার সহায়তার চাল পেতেন। তবে হঠাৎ চাল না পাওয়ার কারণ জানতে গিয়ে জানতে পারেন, নির্বাচন কমিশনের তালিকায় তিনি মৃত। অথচ একজন সুস্থ সবল মানুষ যা যা করেন, তার সবই করছেন। মৃত থেকে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে ন। 

 আবু ছালেহ জানান, জেলা নির্বাচন অফিসে একাধিকবার গিয়েছেন তিনি। তবু মৃতের তালিকা থেকে তার নাম বাতিল করাতে পারেনি। ভোটার তালিকায় পুনরায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত বছরে নভেম্বর মাসে তালতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছেন। ছয় মাস পার হয়ে গেলেও ভোটার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তিনি বলেন, ‘কেন মো’রে  মৃত ভোটার তালিকায় দেখানো হইলো, তার তদন্ত করা হোক। দোষী ব‌্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনা হোক।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. তারিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটি সার্ভারের ব্যাপার। আমি ইচ্ছে করলেই একটা কাজ করতে পারবো না। সময় লাগবে। তবে, এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’

বরগুনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীলিপ কুমার হাওলাদার বলেন, ‘আইডি নম্বর ভুল দেওয়ার কারণে অথবা অপারেটরদের ভুলের কারণে এটি হতে পারে।’

 /এনই/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়