ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ইটভাটার পেটে গেলো ৬০ একর ফসলি জমি

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৭ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৯:৫১, ১৭ এপ্রিল ২০২১
ইটভাটার পেটে গেলো ৬০ একর ফসলি জমি

মাদারীপুরে কৃষিজমি দখল করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। এসব ইটভাটার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে  একরের পর একর ৪ ফসলি জমি। স্থানীদের অভিযোগ, ইতোধ্যে প্রায় ৬০ একর ফসলি জমি ইটভাটা গ্রাস করে ফেলেছে।  এই বিষয়ে প্রশাসনে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া মেলে না জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
  
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামে বছর দশেক আগে মাত্র ২/৩টি ইটভাটা ছিল। বর্তমানে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে ১০টি ইটভাটা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটাগুলোর মালিকরা প্রভাব খাটিয়ে দখল করে নিচ্ছেন ফসলি জমি।  

মদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের জমিতে সম্প্রতি  স্থানীয় ইটভাটার মালিক রহিম খান ইটের জন‌্য জোর কের মাটি কেটে নিয়েছেন। এই বিষয়ে  মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ 

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ইটভাটার মালিকদরে সঙ্গে প্রভাবশারীদের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে বছরের পর বছর এই অনিয়ম দেখেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্রও নেই এই সব ইটভাটার।

মাদারীপুর  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘কৃষি ও কৃষি জমি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটা। গত এক দশকে মাদারীপুরের অতি উর্বর ৪ ফসলি ৮ হাজার হেক্টর জমিতে গড়ে উঠেছে শতাধিক ভাটা। এছাড়া ইটভাটার  বিরূপ প্রভাবে আশেপাশের জমিরও ফসলহানি হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা রাজ্জাক তায়ানি বলেন, ‘কেবল পাঁচখোলা গ্রামেই ইটভাটার কারণে প্রায় ৬০ একর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে  জানা গেছে, প্রতি বছরই বাড়ছে ইটভাটার সংখ্যা। আর এসব ইটভাটার বেশিরভাগই বসানো হচ্ছে ফসলি জমি বা এর পাশঘেঁষে।
ইট তৈরি ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে বলা আছে, কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত সীমা রেখার (ফসলি জমি)  ১ কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না বলেও আইনে বলা হয়েছে।  

জেলা প্রশাসেন তথ্য মতে, মাদারীপুরের ৪টি উপজেলায় বর্তমানে লাইসেন্স প্রাপ্ত ইটভাটার সংখ‌্যা ৭৪। কিন্তু বৈধ-অবৈধ এই উপজেলায় শতাধিক  ইটভাটা রয়েছে।   

এই ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘পরিবশ অধিদপ্তর তদন্ত করে ইটভাটা তৈরির ছাড়পত্র দিলে জেলা প্রশাসন সে অনুযায়ী লাইসেন্স দেয়। তবু  ফসলি জমিতে ইটভাটা ও অবৈধ ইটভাটা তৈরির তথ‌্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কৃষিজমিতে ইটভাটা তৈরির বিষয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাফিজুর রহমান যাচ্চু খানের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরিচয় দিয়ে এসএমএস পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। 

এনই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়