জরিমানা করায় তোপের মুখে ইউএনও
বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মুখে মাস্ক না থাকায় এক স্বর্ণের কারিগরকে জরিমানা করায় জনগণের তোপের মুখে পরেন সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন। শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা শহরের গাজীর মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় ইউএনও জনগনের রোষানল থেকে বাঁচতে এক পর্যায়ে গাড়িতে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, স্বর্ণের দোকানের কারিগর ফেরদৌস নাকের ফুল জোড়া দেয়ার অর্ডার পেয়ে দোকানের অর্ধেক সাটার খুলে কাজ করছিলেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন ঐ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছিলেন। ফেরদৌসের মুখে মাস্ক না থাকায় দেড় হাজার টাকা জরিমানা করেন। ফেরদৌসের স্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে ধার-দেনা করে এক হাজার টাকা যোগাড় করে এনে দেন। কিন্তু বাকি ৫০০ টাকা না দিতে পারায় ফেরদৌসকে উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করা হয়।
তখন স্থানীয় দোকানদার ও এলাকাবাসী ফেরদৌসকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করে। কিন্তু তাকে ছেড়ে না দেওয়ায় জনগণ ক্ষীপ্ত হয়ে ইউএনও’র গাড়ি ঘেরাও করে ও হৈচৈ শুরু করে। বিষয়টি সামাল দিতে না পেরে ইউএনও গাড়িতে অবস্থান নিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্বর্ণের কারিগর ফেরদৌস বলেন, খাওয়ার মতো কোন টাকা-পয়সা বাড়িতে নেই। একজন নাকের ফুল মেরামত করার জন্য ১০০ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য দোকানের একটা সাটার খুলে কাজ করছিলাম। এই মুহূর্তে ইউএনও এসে প্রথমে মাস্ক নেই কেন জানতে চায়। টেবিল থেকে মাস্ক বের করে দেখালেও তার সাথে থাকা একজন ব্যক্তি আমাকে ১৫০০ টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের জেল দিতে বলেন। তাৎক্ষনিক আমার স্ত্রী জানতে পেরে ধার-দেনা করে ১ হাজার টাকা যোগাড় করে দিলেও বাকি ৫০০ টাকা নিতে ও ১৫ দিনের জেল দিতে আমায় গাড়িতে ওঠায়। এসময় এলাকাবাসী আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও ইউএনও ম্যাডাম আমার কোন কথাই শোনেননি। তখন লোকজন ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে।
সোনাতলা থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, উপজেলার গাজীর মোড় স্থানীয় লোকজন উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমরা আসি। সেই সময় ইউএনও মহোদয় তার গাড়িতে বসেছিলেন। পরে লোকজনের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এনাম/আমিনুল
আরো পড়ুন