ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মাদ্রাসায় শিশু ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষক বহিষ্কার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২১ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ০৯:২২, ২১ এপ্রিল ২০২১
মাদ্রাসায় শিশু ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষক বহিষ্কার

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ঢেবঢেবি বাজারে কুলছুম ক্বওমি মাদ্রাসায় সাত বছরের শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করেছেন শিক্ষক। মারপিটের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক আবু সাইদ শিক্ষার্থীদের কাছ  থেকে পড়া আদায় করছেন। তার বাম হাতে একটি খাতা বা বই, ডান হাতে বেত। কিছুক্ষণ পর গোলাপি পাঞ্জাবি পরা একটি শিশুকে আঘাত করছেন তিনি। আরেক শিশু শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে গুতা দিয়ে মাথা নিচু করে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এক পর্যায় শিক্ষক আবু সাইদ রাগান্বিত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাম হাত চেপে ধরে জোরে জোরে পেটাতে শুরু করেন। মার সহ্য করতে না পেরে ওই শিক্ষার্থী মাগো বলে চিৎকার করে ওঠে। এতে শিক্ষক আরও জোরে তাকে পেটাতে থাকেন। এ সময় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভয়ে চুপ হয়ে যায়।

ভিডিওটির সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী পাথরডুবি বাজারের বাসিন্দা এবং ঢেবঢেবি বাজারের ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেনের ছেলে লাম মিয়া ওরফে লাল মিয়া (৭)। সে ওই মাদ্রাসার দ্বিতীয় জামাতের শিক্ষার্থী।

বাবা মোতালেব হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, ঘটনাটি মার্চের ২৭ তারিখের। ছেলেকে বাড়ির জন্য লেখা দেন শিক্ষক। অন্য লেখা নিয়ে যাওয়ায় এমন মারপিট করেছে। ছেলে বাড়িতে এসে ভয়ে কিছু জানায়নি। তিনি ১৯ এপ্রিল ভিডিওটি দেখে আতকে ওঠেন। বাড়িতে গিয়ে ছেলের কাছে সব ঘটনা শুনতে পান।

মোতালেব হোসেন আরও বলেন, ‘আরও কযেকটি শিশুকে ওই শিক্ষক একইভাবে নির্যাতন করেছে বলে জানতে পেরেছি। এই বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাইনি বলে মামলা করিনি।’

অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আবু সাইদ বলেন, ‘পরীক্ষা চলার সময় ওই ছাত্র আমার সঙ্গে বেয়াদবি করায় একটু শাসন করেছি।’

মাদ্রাসার প্রধান মৌলভী শিক্ষক মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক পাথরডুবি বাজারের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি দেড় বছর ধরে এখানে শিক্ষকতা করছেন। তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ঘটনার সত্যতা পেলে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসা চালু রাখা এবং শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাদশাহ/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়