ধান সংকটে চাল উৎপাদন, মূলে সিন্ডিকেট
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর। এখানকার চাল ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের অনেক জেলার চাহিদা মেটায়।
এখানে হাসকিং (ম্যানুয়াল) ও অটো মিল মিলিয়ে চার শতাধিক মিল চাতাল রয়েছে। তবে ধান সংকটে এখানকার বেশির ভাগ মিল ও চাতাল বন্ধ রয়েছে প্রায় মাস জুড়ে। ফাঁকা পড়ে আছে চাতাল ও গোডাউন। নেই শ্রমিকদের কোলাহল। যে দুয়েকটি মিল চাতাল চালু রয়েছে, তাদেরও উৎপাদন চলছে ঢিমেতালে।
এসব কারলে কুষ্টিয়া থেকে চাল সরবরাহে ভাটা পড়েছে। যে কারণে নতুন করে চালের দামও বেড়েছে। নতুন ধান আসা শুরু হলে আবারও সরব হয়ে উঠবে মিলগুলো। আর সেই সঙ্গে দামও কিছুটা কমতে পারে বলেও মনে করছেন মালিকরা।
কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান জানান, বোরো মৌসুমে হাওড় অঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এ ধান শুকনো না হওয়ায় বেশির মিল মালিক তা কিনছেন না, আর দামও বেশি। তবে কয়েক বছরের মধ্যে এবারই বেশি ধান সংকটে পড়েছে খাজানগরের মিল মালিকরা।
তিনি বলেন, ‘ধানের সংকটের কারণে অধিকাংশ মিল এখন বন্ধ রয়েছে। নতুন ধান আসতে আরো ১৫ দিন লাগবে। এরপর বন্ধ মিলগুলো চালু হলে চাল উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়বে।’
ফ্রেস এগ্রো’র স্বত্বাধিকারী ও মিল মালিক সমিতির সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘আবহাওয়া ১০ থেকে ১৫ দিন অনুকূলে থাকলে দেশে প্রচুর ধান উৎপাদন হবে। এতে করে ভোক্তারাও কিছুটা হলেও কম দামে চাল খেতে পারবে।’
শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী আরশেদ আলী বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে কুষ্টিয়া থেকে প্রতিদিন ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বাজারে ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক চাল সরবরাহ হয়। এখন সেখানে গড়ে ৫০ ট্রাকেরও কম চাল যাচ্ছে। নতুন ধান এলে আগামী মাসের শুরুর দিকে আবার উৎপাদনে ফিরবে মিলগুলো। সেই সাথে চাল সরবরাহ বাড়বে। দামও কমতে পারে কিছুটা। চালের বাজারে আসতে পারে স্বস্তি।’
এদিকে কৃষকদের দাবি চালের দাম বাড়ানোর জন্য সিন্ডিকেট করে চালকল মালিক সমিতি এবং চাল ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম ধানের সংকট দেখাচ্ছেন।
ধান চাষী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ধান তো সব মিলারদের কাছেই। ধান কিনে এই সময় দাম বাড়ানোর জন্য তারা ধান গোডাউনে রাখেন। আর বলেন ধান নেই।’
ধান ব্যবসায়ী সোলাইমান জানান, কৃষকদের কাছে বর্তমানে পুরাতন ধান নেই। সব ব্যবসায়ী আর মিলাররা গোডাউনে ভর্তি করে রেখেছেন। ধানের দাম তুলনামূলকভাবে বাড়েনি। নতুন ধান উঠতে এখনও ১০-১৫ দিন দেরি হতে পারে।
ইতোপূর্বে মিলমালিক এবং চালকল সমিতির সিন্ডিকেটে ধান সংকট, ধানের দাম বেশি, বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে চালের দাম বৃদ্ধি করেছে মিলাররা। তারপর থেকে আর কমেনি চালের দাম।
কাঞ্চন কুমার/সনি
আরো পড়ুন