ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী সন্তানকে ফেলে লাপাত্তা বাবা-মা, বিপদে দাদি

নরসিংদী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৮, ৩০ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১৩:৪৫, ৩০ এপ্রিল ২০২১
প্রতিবন্ধী সন্তানকে ফেলে লাপাত্তা বাবা-মা, বিপদে দাদি

সন্তান প্রতিবন্ধী তাই তাকে ফেলে রেখে লাপাত্তা হয়ে গেছেন বাবা-মা। আর এদিকে শিশু তায়্যিবাকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন বৃদ্ধ দাদী সুফিয়া বেগম।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের রাজাবাড়ি গ্রাম। এ গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে রূপচাঁন মিয়া তায়্যিবার বাবা। রূপচাঁন একই উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামের গোলাপ মিয়ার মেয়ে ফারজানাকে ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। বিয়ের দুই বছর পর তাদের মেয়ে তায়্যিবার জন্ম।

জন্মের প্রায় ৩ বছর পর বাবা-মা যখন বুঝতে পারেন তায়্যিবা মানসিক প্রতিবন্ধী। তখন থেকেই তায়্যিবার জীবনে নেমে আসে ঝড়। বাবা-মার অবহেলা অনাদরে পার হয় আরো দুটি বছর। এরপর কাউকে কিছু না বলে রাস্তায় তায়্যিবাকে ফেলে রেখে চলে যায় বাবা-মা। সেই যে গেছে, আর কোনো খোঁজ নেই তাদের। সাধ্য অনুযায়ী খোঁজ করেও সন্ধান মিলেনি বাবা-মার। তাও প্রায় ৫ মাস হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে দাদীকেই লালন-পালন করতে হচ্ছে। সে থেকে আজ পর্যন্ত বৃদ্ধ দাদীর কাছেই আছেন তায়্যিবা।

দাদী সুফিয়া জানান, কথা বলতে ও শুনতে না পারায় তায়্যিবার সঙ্গে সমাজের অন্যান্য শিশুরাও তেমন একটা মিশে না। তাকে লালন-পালন করতেও কষ্ট হচ্ছে তার। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে তাকে মাঝে মধ্যে বাসার বাইরে কাজ করতে গেলে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে তায়্যিবাকে ঘরের খুটির সাথে বেঁধে রেখে যেতে হচ্ছে ।

তায়্যিবার পিতা-মাতাকে খোঁজ না পেয়ে ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর নরসিংদী পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন তায়্যিবার দাদী সুফিয়া বেগম। কিন্তু তার পরও কোন হদিস মিলেনি তাদের।

তায়্যিবার দাদী বলেন, এ মেয়েটিকে নিয়ে আমি পড়ছি মহাবিপাকে। আমি ও আমার স্বামী দুজনেই বৃদ্ধ, তাছাড়া আমার স্বামী কোনো কাজ কর্ম করতে পারে না। আমি টুকটাক কিছু করে দিন আনি দিন খাই। আমার পক্ষে তায়্যিবার ভরণ পোষণ কষ্ট হয়ে পড়েছে। এতোটা বছর জীবনের সঙ্গে  যুদ্ধ করেও এই শেষ বয়েসেও নিস্তার নেই।

তিনি বলেন, তায়্যিবাকে যদি সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হতো তাহলে হয়তো কষ্ট কিছুটা হলেও কম হতো।

এইচ মাহমুদ/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়