ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রংপুরে লোডশেডিংয়ে চাহিদা বেড়েছে হাতপাখার

রংপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৪, ২ মে ২০২১  
রংপুরে লোডশেডিংয়ে চাহিদা বেড়েছে হাতপাখার

এক যুগ আগেও গ্রামীণ জীবনে হাতে হাতে হাতপাখা দেখা যেতো। গরমকালে যার বেশ কদর ছিলো। অনেকে বাশের ফ্রেম করে নিপুণ হাতে সুতো বুনে, আর কেউবা তালপাতা, গোল পাতা আর কাপড় দিয়ে তৈরি করতো শরীর শীতল করার এই হাতপাখা।

বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে নতুন করে হাতপাখার কদর বেড়েছে রংপুরে। সুযোগটিকে বেশ লুফেই নিয়েছেন বেশকিছু হাতপাখা বিক্রেতা।

গত কয়েকদিনে রংপুর অঞ্চলে একদিকে প্রচন্ড দাবদাহ অন্যদিকে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিং আর লো ভোল্টেজের কারনে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে।

বিভাগীয় নগরী রংপুরে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বাস। সেখানে সার্বক্ষনিক বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারছে না পিডিবি। দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে লো ভোল্টেজের কারণে সিলিং ফ্যান তেমনভাবে ঘুরছে না। ফলে প্রচণ্ড গরমে নগরবাসির নাভিশ্বাস উঠেছে নগরবাসীর।

বাসাবাড়িতে গরমের তাপ থেকে নিজেকে ক্ষানিকটা শীতল করতে অনেকে নগরীর ফুটপাতে হাতপাখা কিনতে ছুটে আসছেন। বাসাবাড়ির পাশাপশি তারাবির নামাজ আদায়কালে গরম থেকে বাঁচতে অনেক মসজিদেও ডজনধরে হাতপাখা কিনতে দেখা গেছে।

শনিবার (১ল মে) দুপুরে নগরীর কাচারি বাজার, কোর্ট চত্বর এবং ধাপ মেডিক্যাল এলাকায় ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রির দোকানগুলো এখন ক্রেতা সমাগমে ভরপুর। এসব দোকানে আগের তুলনায় গত কয়েকদিন থেকে বেচাকেনা প্রায় দ্বিগুণ। প্রকার ভেদে একটি হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকায়।

কাচারি বাজার এলাকার ডাকঘরের সামনে পাখা বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, গত চার-পাঁচ দিন থেকে হাত পাখার চাহিদা বেড়ে গেছে। এখন দিনে ২০০-২৫০ পিস হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকার দামের হাতপাখা বিক্রি করছেন তিনি। এতে দিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।

হাতপাখা ক্রয় করতে আসা যুবক রাফি জানান, গত এক সপ্তাহে তাদের এলাকায় প্রায় ২০-২৫ জনের ফ্রিজ, টেলিভিশন, ফ্যান টিউব লাইট নষ্ট হয়ে গেছে। তার বাসাতেও একটি ফ্যান নষ্ট হয়েছে। করোনার কারণে সরকার অযথা বাহিরে বের হতে নিষেধ করেছেন কিন্তু বিদ্যুত ঠিকমতে না থাকার কারণে গরমে ঘরেও থাকতে পারছেন না। বিকল্প হিসেব এই হাতপাখা কিনতে এসেছেন তিনি। বিদ্যুত না থাকার সুযোগে পাখা প্রতি ১০-১৫ টাকা করে বাড়তি চাইছে বিক্রেতারা। উপায় নেই, তাই ৪টি পাখা কিনেছেন।

উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড গরম আর বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজে অতিষ্ট হয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শ্রমিক অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুত নেওয়ার যে ট্রান্সফরমার, সেটি অকেজো হয়ে পড়েছে। তাই ট্রান্সফরমার বাড়ানোসহ এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র না হওয়া পর্যন্ত লো ভোল্টেজ থেকে নিস্কৃতি পাওয়া যাবেনা বলে জানান রংপুর পিডিবি অফিসের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন।

অপরদিকে চলতি সপ্তাহে উত্তারাঞ্চলে ১০ বছরের রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানান রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান।

আমিরুল ইসলাম/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়