ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে না দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আছিয়ার

পঞ্চগড় সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩১, ৩ মে ২০২১   আপডেট: ১০:৪৯, ৩ মে ২০২১
আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে না দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আছিয়ার

পঞ্চগড় শহরের উত্তরা ব্যাংকের সামনে চার বছর বয়সি সন্তান জান্নাতুনকে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আছিয়া খাতুন (২২)।

এখনো সেখানেই পাওয়া যাবে তাকে। তবে ভিক্ষাবৃত্তিতে নয়, এখন থেকে তিনি মাস্ক বিক্রি করবেন আর ওজন মাপার যন্ত্র দিয়ে উপার্জন করবেন।

রোববার (২ মে) পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীর পক্ষ থেকে একটি ওজন মাপার যন্ত্র এবং বেশ কিছু মাস্ক দিয়ে তার এই স্থায়ী উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেন জেলা পুলিশের মিডিয়াসেলে দায়িত্বরত এটিএসআই শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।

এর আগে, গত ২৭ এপ্রিল বিভিন্ন মিডিয়ায় ‘হাতে জাল নোট ধরিয়ে দিয়ে অন্ধ ভিক্ষুকের টাকা নিয়ে উধাও’ শিরোনামে আছিয়াকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সেখানে জানানো হয়- ওই দিন এক অচেনা মানুষ এসে আছিয়াকে ৪০ টাকা দান করার কথা বলে ৬০ টাকা ফেরত নিয়ে তার হাতে একটি একশ টাকার জাল নোট ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন। আছিয়ার কাছে নোটটা মোটা মনে হওয়ায় তিনি আশপাশের মানুষদের দেখতে বলেন। তারা জানান- এটা জাল নোট। জাল নোটের কথা শুনে কাঁদতে শুরু করেন আছিয়া।

সংবাদটি নজরে আসে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলীর। তিনি খোঁজ নিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। একই সাথে আছিয়াকে যেন আর ভিক্ষাবৃত্তি করতে না হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেন।

জানা গেছে, আছিয়া পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকায় চার বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে জান্নাতুনকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলতো তার জীবন। তার বাবার বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার তেরো মাইল বাকপুর এলাকায়। জন্ম থেকেই তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কয়েক বছর আগে পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট এলাকার ভ্যানচালক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে আছিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। স্বামীর ঘরে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী দেখভাল না করায় তিনি একমাত্র মেয়ে জান্নাতুনকে সঙ্গে নিয়ে সারাদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে যা পান তা দিয়ে চলে তাদের জীবন।

এদিকে, ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে মাস্ক বিক্রি আর ওজন মাপার যন্ত্রে বেশি উপার্জন বলে বেশ খুশি আছিয়া। যেখানে হাত পেতে দুই টাকা ভিক্ষা পাওয়া যেতো না, সেখানে পথচারিরা ওজন মাপার বিনিময়ে পাঁচ থেকে ১০ টাকা দিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

এটিএসআই শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পঞ্চগড় জেলা পুলিশ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মানবিক বিষয়ে সবসময় সক্রিয়। এধরণের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

মো. আবু নাঈম/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়