ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কাপ্তাই লেককেন্দ্রিক ৪০ হাজার মানুষ চরম দুর্দিনে

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১২, ৫ মে ২০২১  
কাপ্তাই লেককেন্দ্রিক ৪০ হাজার মানুষ চরম দুর্দিনে

দেশের বৃহত্তম কৃত্রিম লেক কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্ভরশীল জেলে, নৌযান শ্রমিক এবং কাঠ বাঁশসহ বিভিন্ন ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ হাজার মানুষের চরম দুর্দিন চলছে। 

একদিকে লকডাউন পরিস্থিতি, কাপ্তাই লেকের পানি স্বল্পতা এবং মাছ ধরা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে বেকার ও কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। 

সরেজমিন কাপ্তাই লেক এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১মে থেকে কাপ্তাই লেকে তিন মাসের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। এর ফলে পুরোপুরি বেকার ও কর্মহীন কাপ্তাই লেকের মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীন প্রায় ২০ হাজার জেলে। 

অপরদিকে দীর্ঘ অনাবৃষ্টির ফলে কাপ্তাই লেকের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় লেককেন্দ্রীক কাঠ ও বাঁশের ব্যাবসাও বন্ধ রয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। লকডাউন এবং লেকে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় লেকে নৌযান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বেকার হয়ে পড়েছে আরও প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রেণির ব্যাবসায়ী। 

ব্যাবসা বাণিজ্য বন্ধ এবং কাজ না থাকায় অত্যন্ত মানবেতর অবস্থায় দিনাতিপাত করছে কাপ্তাই লেকের পানির উপর নির্ভরশীল ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

কাপ্তাই কাঠ ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি লোকমান আহাম্মেদ রাইজিংবিডিকে জানান, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে কাপ্তাই লেকের পানি অস্বভাবিকভাবে শুকিয়ে গেছে। এর ফলে এক দিকে লেকে নৌযান চলাচল করতে পারছে না, অপরদিকে লেক কেন্দ্রীক কাঠ, বাঁশসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামালের ব্যাবসাও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে আছে। এতে ব্যাবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।

কাপ্তাই ইঞ্জিনচালিত বোট মালিক সমিতির সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের চরম দুর্দিন চলছে। শত শত নৌযান শ্রমিক এখন বেকার। তাদের ঘরে খাবার নাই। লেকে পানি নাই, কাজও নাই। সহসা বৃষ্টিপাত না হলে লেক নির্ভর নৌযান শ্রমিকরা অনাহারে মারা যাবে।’

এদিকে কাপ্তাই লেকে মাছের প্রজননের স্বার্থে গত ১ মে থেকে ৩ মাসের জন্য লেকে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এর ফলে বেকার হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার জেলে। 

কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার এম তৌহিদুল ইসলাম এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় মাছের প্রজনন বৃদ্ধির স্বার্থে ১ মে থেকে তিন মাসের জন্য লেকে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সময়ে জেলার ৮টি উপজেলায় কাপ্তাই লেকে মাছ ধরার সাথে সম্পৃক্ত জেলেদের প্রত্যককে প্রতি মাসে ২০ কেজি করে চাল ও অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।’

রেজাউল করিম/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়