ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ইয়াসের প্রভাব: বাগেরহাটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ২৫ মে ২০২১  
ইয়াসের প্রভাব: বাগেরহাটে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে বিপাকে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। 

মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে থেকেই জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। এছাড়া থেমে থেমে বৃষ্টিও হয়। এতে নদ-নদীর পানির উচ্চতা দুই থেকে আড়াই ফুট বেড়ে যায়।

পানি বেড়ে যাওয়ায় শরণখোলার ভোলা, বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি ও ভৈরব নদীর পাশে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও শরণখোলার বগী গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ দুই কিলোমিটার অংশে যেকোনো সময় পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর ও উপজেলা খাদ্যগুদাম চত্বরে এক থেকে দেড় ফুট পানি উঠেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগী ও রোগীর স্বজনরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে পূর্ণ জোয়ারে দড়াটানা নদীর পানির লেভেল ছিল ২ দশমিক ৬০ মিটার। এই নদীর স্বাভাবিক সীমা ২ দশমিক ৪৪ মিটার। অর্থাৎ নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটা হওয়ার সাথে সাথে কিছু এলাকার পানি নামতেও শুরু করেছে।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীর তীরে বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা গ্রাম সানকিভাঙ্গা ও বদনী ভাঙ্গা গ্রামের আলী শেখ, মনির হোসেন, মুক্তা বেগম, লাল বড়ু বেগমসহ কয়েকজন বলেন, ‘সকালের জোয়ারে দুই থেকে তিনফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের অনেকের বাড়ি-ঘরে পানি উঠে গেছে। নদীর পানি ঠিকমত না টানার কারণে বাড়ির পানিও টানছে না। পানি যদি এর থেকে বেশি হয়, তাহলে বাড়িতে বসবাসের পরিস্থিতি থাকবে না। আমাদের বাড়ির আস পাশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রও নাই।’

শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী বগী, ভোলা নদীর তীরবর্তী শরণখোলার চরগ্রাম, পানিরঘাট, সোনাতলা এলাকায় আটশ’রও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

বাগেরহাটের ভৈরব নদীর পাশে মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রসহ আশপাশের শতাধিক পরিবারের বাড়ি ঘরে পানি উঠে গেছে। 

মাঝিডাঙ্গা এলাকার সোহরাব হোসেন রতন বলেন, ‘ভৈরব নদীর তীরে আমাদের এই গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে এখানে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝড়-জলচ্ছ্বাসে আমাদের পানিতে ডুবতে হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পূর্ণ জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’

বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার রিজাউল করিম বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুয়ায়ী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় আমরা সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলাগুলোতে শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়ণকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতেও সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জন্য জেলার ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলার ৭৫টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে ২৫ হাজার টাকা ও ৩টি পৌরসভায় দুই লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় শিশু খাদ্যের জন্য এক লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

টুটুল/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়