ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নামতে শুরু করেছে বরগুনার প্লাবিত এলাকার পানি

বরগুনা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৯, ২৭ মে ২০২১   আপডেট: ১১:৩৩, ২৭ মে ২০২১
নামতে শুরু করেছে বরগুনার প্লাবিত এলাকার পানি

বরগুনা জেলার প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। ফলে পানিবন্দি মানুষও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছেন।

ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র প্রভাবে মঙ্গলবার রাতের ও বুধবার সকালের জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় জেলার ৬ উপজেলার ১৬টি গ্রাম। জোয়ার শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এখনো পর্যন্ত কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি তারা। তাই অনাহারে-অর্ধাহারে রয়েছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বরগুনা সদরের লতাবাড়িয়া এলাকার বেড়িবাঁধটি জোয়ারের চাপে আংশিক ভেঙে প্লাবিত হয় লতাবাড়িয়া গ্রাম। একই সময়ে সদরের আয়লা-পাতাকাটা, পাথরঘাটার পদ্দা, তালতলীর জয়ালভাঙা ও তেতুলবাড়িয়াসহ বামনার রামনা বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। বুধবার সকাল ১০টার দিকে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে আবারও এসব ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয় ১৬টি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ৫ হাজার পরিবার। ভেসে যায় ৫ শতাধিক মাছের ঘের ও প্রায় দেড় হাজার পুকুরের চাষের মাছ।

সদরের লতাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার পর থেকেই জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন তারা। তবে তাদের সহায়তার জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি। মঙ্গলবারের পানিতে তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে বুধবারের জোয়ারে বাঁধটি পুরোপুরি ছুটে যায়। এতে ভেসে যায় তার মাছের ঘের। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

তালতলীর জয়ালভাঙা এলাকার বাসিন্দা জলিলুর রহমান বলেন, প্রতি বছর এই বাঁধ ঘূর্ণিঝড়ের সময় ভেঙে যায়, তারপরে যেনতেন ভাবে জরুরি মেরামত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহাসেন ফণী ও আম্পানেও এই বাঁধ ভেঙেছে। আর প্রত্যেকবারই জরুরি মেরামত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে তা এলাকার উপকারে আসেনি। প্রত্যেক ঘূর্ণিঝড়েই তারা পানিতে ভেসেছেন।

এদিকে পানি নামতে শুরু করায় বরগুনা সদরের আয়লাপাতাকাটা, পাথরঘাটার পদ্দা, বামনার রামনা আমতলীর পরীকাটা ও বেতাগীর ঝোপখালী, মোকামিয়া, বদনীখালী এলাকার মানুষ অনেকটাই স্বস্তিতে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়েই বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এখন পানিও নেমে গেছে। তবে প্রত্যেক অমাবস্যা-পূর্ণিমায় নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ে। তখন আবার তারা প্লাবিত হবেন।

বেতাগীর মোকামিয়া এলাকার রুবেল মিয়া বলেন, পানিতে তার মাছের ঘের ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।  গত বছর আম্পানেও তার প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বছর ১২ লাখ টাকার মাছ শেষ। এই ঘাটতি পূরণ করার কেউ নেই।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম বলেন, বরাদ্দ স্বল্পতার কারণে জরুরি মেরামতের বিকল্প কোনো পথ নেই। তবে এবার তিনি উপকূল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো স্থায়ীভাবে নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, জোয়ারের পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে গেছে। তবে নামতে কিছুটা সময় লাগেছে। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। যাদের ক্ষতি হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।

ইমরান/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়