ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আসমার ফাঁসি চান বাবা 

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৬, ২৯ মে ২০২১   আপডেট: ১৫:২৩, ২৯ মে ২০২১
আসমার ফাঁসি চান বাবা 

বাবা মো. আশরাফ আলী, ইনসেটে আসমা

‘ছয় টুকরো করে হত্যা করার বিষয়টি হৃদয় বিদারক, কষ্টদায়ক ও ন্যাক্কারজনক। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমার মেয়ে আসমা যদি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার ফাঁসি দাবি করছি। দুষ্ট গরু থাকার চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভাল’ —এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন উত্তরার দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদে ছয় টুকরো করে হত্যা করা আজহারুলের স্ত্রী আসমা আক্তারের বাবা মো. আশরাফ আলী। 

শুক্রবার (২৮ মে) বিকেলে মো. আশরাফ আলী এসব কথা বলেন। তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের কুইজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

মো. আশরাফ আলী জানান, আসমার তৃতীয় বিয়ে হওয়ার পর থেকে আমাদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিলো না। গত বছর ঈদে আমাদের বাড়ি আসছিলো সে। এরপর আর কোনো যোগাযোগই ছিলো না। গত রোজার ঈদের আগে আসমার যখন স্বামী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলো তখন থেকে আবার যোগাযোগ শুরু হয়।

মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের দিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে হত্যার বিষয়টি জানায়। কে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তা কিছুই বলেননি তারা। পরে মেয়ে নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে ঢাকায় যাই। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব আমাদের আলাদা করে একটি ঘরে বসিয়ে রাখে। সেখানে কথা বলার পরদিন আমাকে ছেড়ে দেয়। এরপর আসমা এবং ইমামকে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আসমার ছেলে আরিয়ান সিকদারকে আমার হেফাজতে দিয়েছে র‌্যাব। আরিয়ান এখন আমাদের হেফাজতেই রয়েছে।’

আশরাফ আলী আরও  জানান, তার পাঁচ সন্তান, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে আসমা দ্বিতীয়। ২০১৪ সালে পার্শ্ববর্তী দূর্গাপুর গ্রামে এক ছেলের সঙ্গে আসমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সেই বিয়ের পরদিন আসমা চলে আসে স্বামীর সংসার ছেড়ে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে কালিহাতীর এলেঙ্গা রাজাবাড়ি  জুলহাস উদ্দিনের ছেলে সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আসমার বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই আসমা ও সাহাবউদ্দিনের ছোট ভাই আজহারুল বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন সাহাবুদ্দিনকে তালাক দিয়ে আসমা আজহারুলকে বিয়ে করেছেন। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেনি পরিবারের লোকজন।

আসমার গ্রামের প্রতিবেশিরা জানান, বিয়ের আগে পর্যন্ত আসমা অনেক ভাল ছিলো। ছাত্রী হিসেবেও অনেক ভাল ছিলো। কিন্তু প্রথম বিয়ের পর থেকে আসমা পরিবর্তন হতে থাকে। এরপর একাধিক পরকীয়া জড়িয়ে পড়েন। পরে দ্বিতীয় স্বামীর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পালিয়ে চলে যায়। তারপর থেকে এলাকায় তেমন আসেননি তিনি। এলাকাবাসীর সঙ্গে তেমন কোনো কথাও হয়নি। সেই স্বামীকেও হত্যা করা কঠিন একটি কাজ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এলাকাবাসী।

নিহত আজাহারের বাবা জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। তার কোনো ভুলও ছিলো না। তারপরও কেন আমার ছেলেকে হত্যা করা হলো? সে তো আমার ছেলেকে তালাক দিয়ে ইমামকে বিয়ে করতে পারতো। আমি আসমা ও ইমামের ফাঁসি দাবি করছি।’

প্রসঙ্গত, সোমবার (২৪ মে) দিবাগত রাতে উত্তরার দক্ষিণখান সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেফটি ট্যাংক থেকে আজাহারের ছয় টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আসমা আক্তার ও মসজিদের ইমামকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: দক্ষিণখানে ৬ টুকরা লাশ: নিহতের স্ত্রী গ্রেপ্তার

সেপটিক ট্যাংকে মিললো নিখোঁজ যুবকের মরদেহ

কাওছার/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়