ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভাঙ্গুড়ায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ৯ জুন ২০২১   আপডেট: ২০:৪০, ৯ জুন ২০২১
ভাঙ্গুড়ায় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

আসছে বর্ষাকাল। তাই পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় চলছে নৌকা তৈরি। চলছে পুরনো নৌকা মেরামতের কাজও। প্রতিবছর বর্ষা আসার আগে চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়ায় শুরু হয় নৌকা তৈরির কাজ। এ সময়ে নৌকার কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়।

বর্ষাকালে এ উপজেলার অধিকাংশ জনপদ পানিতে থৈ থৈ করে। ডুবে যায় রাস্তাঘাট, নদী-নালা, খাল-বিল। যাতায়াত করতে হয় নৌকায় । মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করে ছোট-বড় নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলে এখানে বেড়ে যায় নৌকার কদর।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের কালিবাড়ী, জগাতলা ও উপজেলার অষ্টমনিষায় ৫০-৬০টি কাঠমিস্ত্রি পরিবার রয়েছে। কাঠের কাজ তাদের প্রধান পেশা। এ সকল কাঠমিস্ত্রিরা বর্ষা মৌসুম শুরুর মাসখানেক আগে থেকে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বছরের বাকি সময় তারা চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা প্রভৃতি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। 

নৌকার কারিগর মহাদেব সূত্রধর বলেন, কাঠের কাজ তার পেশা। প্রতিবছর বর্ষাকাল আসার ১-২ মাস আগে থেকে তিনি নৌকা তৈরির কাজ শুরু করেন। বর্ষায় নৌকা আর বছরের বাকি সময়টা চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা তৈরি করে চলে তার সংসার। 

এলাকার প্রবীণ কাঠমিস্ত্রি বিশনো সূত্রধর জানান, ৯ হাত লম্বা নৌকা ৩-৪ হাজার টাকা এবং ১২ হাত নৌকা ৫-৬ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। তিনি আরও জানান, হাট-বাজারে তিনি নৌকা বিক্রি করেন না। ভাঙ্গুড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ এসে তার কাছ থেকে নৌকা তৈরি করে নিয়ে যায়।

কাঠমিস্ত্রি কালু প্রামাণিক জানান, এখন নৌকা তৈরির কাজ অনেক বেশি। গত কয়েকদিনে তিনি বেশ কয়েকটি নৌকা বিক্রি করেছেন।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের দুগ্ধ খামারি বাবলু ফকির জানান, তিনি সাড়ে ৯ হাত লম্বা একটি নৌকা সাড়ে ৫ হাজার টাকায় কিনেছেন। বর্ষা মাসে তিনি কচুরিপানা কাটার কাজে নৌকাটি ব্যবহার করবেন।

নৌকা কিনতে আসা ফরিদপুর উপজেলার বেরহাউলিয়া গ্রামের ইসরাইল প্রামাণিক বলেন, বর্ষাকালে হাতে অন্য কাজ না থাকায় তিনি মাছ ধরে থাকেন। তাই কাঠমিস্ত্রির কাছে এসেছেন ১২ হাত লম্বা নৌকা তৈরি করে নিতে।

ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. সোহায়েল সাচ্চু বলেন, এলাকায় সড়ক পথের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হলেও বর্ষাকালে এখনও নিম্নাঞ্চলের মানুষের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম নৌকা। এই সময়টাতে চলন বিলাঞ্চলে নৌকা তৈরির ধুম পড়ে। 

শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়