ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

চাঁদপুরে ২৬৪টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, দেড় কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

চাঁদপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:০৫, ১০ জুন ২০২১   আপডেট: ০৮:৩০, ১০ জুন ২০২১
চাঁদপুরে ২৬৪টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, দেড় কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

চাঁদপুর শহরে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত ২৬৪টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ৬টি, বাকি ২৫৮টি আবাসিক গ্যাস সংযোগ ছিল। মাত্র ৯ দিনের অভিযানের চাপে গ্রাহকদের থেকে বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

জানা যায়, আবাসিক গ্যাস সংযোগগুলোর মধ্যে ৭০টি বকেয়া এবং বাকিগুলো সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ ছিল। আর এই অভিযানে মাঠে নেমেছে ২১টি স্পেশাল টিম। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশেষ সংযোগ বিচ্ছিন্ন টিম’। প্রতিটি টিমে ৪ জন করে মোট ৮৪ জন লোক কাজ করছে। যারা ঢাকা থেকে এসেছে। এই অভিযান ৩১ মে থেকে শুরু হয়েছে এবং যা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই অভিযান চলছে। চাহিদার প্রেক্ষিতে এর সময়সীমা বাড়তে পারে। 

আরও জানা যায়, চলমান সময়ে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোন সিদ্ধান্ত না হলেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অনেকেই অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ চালাচ্ছেন। অথচ চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের আওতায় চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি এবং মতলব দক্ষিণ রয়েছে। যেখানে আবাসিক ২৩ হাজার ৮৫০টি, বাণিজ্যিক ২০৬টি, সিএনজি ৫টি, ক্যাপটিক ৩টি, ১টি পাওয়ার এবং ২টি ইন্ড্রাস্ট্রি বৈধ গ্রাহক হিসেবে রয়েছে। কিন্তু কতিপয় ঠিকাদার ও বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অবৈধ সংযোগের কারণে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

বুধবার (৯ জুন) অনুসন্ধানে জানা যায়, চলমান এই বিশেষ অভিযানে বিচ্ছিন্নকৃত অবৈধ গ্যাস সংযোগ কতিপয় ঠিকাদারের যোগসাজশে গ্যাস বিচ্ছিন্নকারী টিম চলে যাওয়ার অবৈধ গ্রাহকগণ পরে পুনরায় সংযোগ চালু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি সম্পর্কে অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কার কার কয়টি অবৈধ সংযোগ এবং কোথায় বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং চাঁদপুরে তাদের কতজন ঠিকাদার রয়েছে সে তথ্যের তালিকা বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের ম্যানেজারের কাছে গণমাধ্যমকর্মীরা চেয়েছেন। ওই তালিকা দ্রুত দিবেন বলেও গণমাধ্যমকর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড চাঁদপুরের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী মো. মাহমুদুজ্জামান।

তিনি উপরোক্ত সব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সাংবাদিকদের অনুসন্ধান সঠিক। চলমান অভিযানে বিচ্ছিন্ন করা সংযোগ আমরা চলে আসার পর পুনরায় চালু করার অভিযোগ পেয়েছি। এমন একটি অভিযোগে চাঁদপুর সরকারি কলেজের উত্তর পাশের মাসুদ আলম নামের একজনের সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করেছি। পাশাপাশি অন্যগুলোও ক্রসচেক দিচ্ছি।

তিনি অসাধুদের উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ যদি আমাদের অভিযানে বিচ্ছিন্ন করা সংযোগ আমরা চলে আসার পর পুনরায় অবৈধভাবে চালু করার চেষ্টা করেন। তাহলে আমরা শুধু রাইজার নয় একদম মূল জায়গা থেকে ওই গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করবো। আর তিনি কখনই গ্যাস সংযোগ পাবেন না। এরসাথে কেউ জড়িত হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষ নেবেন না।

তিনি বলেন, প্রচুর বকেয়া বিল কালেকশন হচ্ছে।ইতিমধ্যে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। আশা করছি আগামী ১৫ তারিখের মধ্যেই পুরো বকেয়ার টাকা আদায় করা সম্ভব হবে। আমাদের হট লাইন হচ্ছে ১৬৫২৩। যেকোন অভিযোগ বা পরামর্শ আমাদের এই নাম্বারে জানাতে অনুরোধ করছি।

এর আগে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড চাঁদপুরের আওতায় 'অবৈধ গ্যাস সংযোগের ছড়াছড়ি' এমন অভিযোগ উঠে আসে। সাম্প্রতি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এক সভায় বিষয়টি নিয়ে চুলছেড়া আলোচনা হয়েছে। এর পর পরই একযোগে গ্যাস বিতরণ কেন্দ্রের ১৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে।

জয়/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়