ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রংপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সর্বাঙ্গে ব্যথা

রংপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ১২ জুন ২০২১   আপডেট: ১৫:২০, ১২ জুন ২০২১
রংপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সর্বাঙ্গে ব্যথা

বিকল রোগ নির্ণয়ক যন্ত্র, চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি, অস্বাস্থ্যকর এবং অরক্ষিত পরিবেশসহ নানা অনিয়মে রংপুর বক্ষব্যাধি হাসপাতাল যেন নিজেই রোগী। কাগজে-কলমে চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ থাকলেও রোগী এবং স্বজনদের অভিযোগ সময়মতো কাউকেই পাওয়া যায় না। হাসপাতালের এমন বেহাল দশা দেখে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীও। তাদের বক্তব্য- এ যেন সর্বাঙ্গে ব্যথা, পরিত্রাণের উপায় অজানা।  

জেলার তাজহাটে ১৯৬৫ সালে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এক তলা ভবনের ছয়টি কক্ষে চলে হাসপাতালের চিকিৎসা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। যদিও জরাজীর্ণ হাসপাতাল ভবনে রয়েছে ফাটল আতঙ্ক। কয়েকটি কক্ষে নামমাত্র চুনকাম করলেও বাকিগুলো স্যাঁতসেঁতে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। রোগীদের বিছানা থেকে টয়লেট, বাথরুম সবই অপরিচ্ছন্ন।

২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে তিনটি ওয়ার্ড থাকলেও বাস্তবে কোনো রোগী দেখা যায়নি ওয়ার্ডগুলোতে। অফিস সহকারী রুহুল আমিন বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে ছয়জন রোগী ভর্তি আছে। তাদের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় সকালে এসে ওষুধ ও পরামর্শ নিয়ে তারা বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

১০ জুন দুপুরে চিকিৎসা নিতে আসা আফসানা বেগম চিকিৎসক না পেয়ে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘এখানে এসে দেখি নোংরা পরিবেশ! নিরুপায় হয়েই এখানে আসতে হয়েছে।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু জনবল সংকটই নয়, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকে না। রোগীদের বেশির ভাগ সময় বাইরে গিয়ে এক্স-রেসহ অন্যান্য পরীক্ষা করাতে হয়।

কাগজে-কলমে অফিস সময়ে দুইজন চিকিৎসক, তিনজন সিনিয়র স্টাফ নার্স, তিনজন সহকারী নার্স, দুইজন ওয়ার্ড বয় থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে উপস্থিত ছিলেন একজন নার্স। বাইরে চায়ের দোকানে বসে খোশগল্প করছিলেন একজন ওয়ার্ডবয়। এই প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে নার্স ফোন করে অফিস সহকারীকে ডেকে আনেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এগুলো এই হাসপাতালের প্রতিদিনের দৃশ্য। তারা জানান, এসব কারণে এখন খুব কম রোগী হাসপাতালে আসেন।

সহকারী নার্স নাজমা বেগম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। সকালে নিয়মিত একজন চিকিৎসক থাকেন। তবে হাসপাতালের জন্য একজন নৈশ্যপ্রহরী দরকার। সন্ধ্যা হলেই হাসপাতালের সামনে খেলার মাঠে বখাটেরা আড্ডা দেয়, নেশা করে বলে জানান নাজমা বেগম।

এদিকে হাসপাতালের বেহাল অবস্থার কথা অকপটে স্বীকার করে জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালের সংস্কার কাজ চলছে। মেশিনারিজসহ যাবতীয় সমস্যা দ্রুত নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ লোকবল সঙ্কট নিরসনেও ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

আমিরুল/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়