ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাঙামাটিতে ধসের আতঙ্কে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা 

বিজয় ধর, রাঙামাটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৬, ১৪ জুন ২০২১  
রাঙামাটিতে ধসের আতঙ্কে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা 

রাঙামাটির পৌর এলাকাসহ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসরত এ সকল মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাঠে নেমেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে শহরের ৩৫টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সতর্কতামূলক মাইকিং অব্যাহত রয়েছে। 

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৩ জুন টানা বর্ষণের ফলে রাঙামাটি পৌর এলাকাসহ জেলায় পাহাড় ধসে ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জন নিহত হয়। পরের বছর ২০১৮ সালের ১১ জুন নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৪ জনসহ ১১ জন মারা যায়। 

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছে, শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন এলাকা, শিমুলতলী, ভেদেভেদী, সনাতন পাড়া, লোকনাথ মন্দিরের নিচের এলাকা, রূপনগর, আরশি নগর, টিভি স্টেশন এলাকা। এছাড়াও রাঙামাটির কাপ্তাই, কাউখালী, নানিয়ারচর উপজেলায় শত শত মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। 

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীরা বলছেন, সরকার বিভিন্ন সময়ে তাদের অন্যত্র স্থানান্তরের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও পর্যন্ত কিছু করেনি। তাই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই পাহাড়ের পাশে বসবাস করছে। শহরের শিমুলতলী এলাকার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় থাকি। বৃষ্টি আসলে আমাদের কোনো নিশ্চয়তা নেই আগামীকাল বেঁচে থাকবো কি না।’ তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের এদেশে জায়গা হয় কিন্তু আমরা জায়গা পাই না।’ 

রুপনগর এলাকার তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় থাকি,  সরকার যদি আমাদের অন্য ব্যবস্থা করে তাহলে সেখানে চলে যাব।’ রুপনগর এলাকার মিনু আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের নিজের জায়গা নেই। তাই পাহাড় কেটে ঘর করে এখানে থাকি। ভারী বৃষ্টিপাত হলে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যায়।’ 

এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কমিশনার রবি মোহন চাকমা বলেন, ‘বর্ষার মৌসুম এলে আমরা পৌরসভা থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা করে থাকি। রাঙামাটি পৌর এলাকার যেসব ঝুকিঁপূর্ণ ওয়ার্ড আছে, সবগুলোতে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এর পাশাপাশি অতিমাত্রায় যারা পাহাড়ের নিচে বসবাস করছে,  তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।’ 

পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের অন্যত্র পূনর্বাসনের বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এটির জন্য সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন। একদিনে তা সম্ভবও নয়। প্রয়োজন দীর্ঘমেযাদী পরিকল্পনা।

বিজয়/বকুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়