ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনায় পেয়ারা চাষিরা মহাবিপদে

ঝালকাঠি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ৫ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৫:৩৪, ৫ জুলাই ২০২১
করোনায় পেয়ারা চাষিরা মহাবিপদে

ঝালকাঠির পেয়ারা ঐতিহ্যবাহী। জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্যও এটি। বর্তমানে পেয়ারার মৌসুম চলছে। এখন চাষিদের মুখে হাসি থাকার কথা। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চাষিদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ।

বছরের দেড় থেকে দুই মাস পেয়ারার মৌসুম থাকে। এই সময়ের আয় দিয়ে বছরের বাকি সময়গুলো সংসার চালাতে হয় পেয়ারা চাষিদের। এবার চাষিদের চলার পথে বড় ধরণের ছন্দপতন ঘটিয়ে দিয়েছে এই করোনা মহামারি।

জেলার অধিকাংশ মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ ও জীবিকার অবলম্বন। আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী-খাল জুড়ে নৌকায় নৌকায় দেখা যায় পেয়ারার সমারোহ। পেয়ারার মৌসুমের শুরুতেই লকডাউন শুরু। এ কারণে পাইকাররা আসবে না। অপরদিকে ভাসমান পেয়ারা হাট দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরও ঢল নামবে না।

দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের প্রভাবে জনশূন্য ভাসমান পেয়ারার হাট। তাই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে কৃষকদের। লোকসানের আশঙ্কায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন হাজার হাজার পেয়ারা চাষি। ভিমরুলী, শতদশকাঠী, খাজুরিয়া, ডুমুরিয়া, কাপুড়াকাঠী, জগদীশপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেল এমন হতাশারই চিত্র।

জানা গেছে, এখানের পেয়ারা চাষ শত শত বছর ধরে তারা বংশানুক্রমে। স্থানীয়দের মতে, আনুমানিক ২শ বছর আগে স্থানীয় কালীচরণ মজুমদার ভারতের ‘গয়া’ থেকে এই জাতের পেয়ারার বীজ এলাকায় রোপণ করেন। সেই থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে পেয়ারার চাষ। তবে প্রবীণ পেয়ারা চাষিরা জানালেন এখানে ১৯৪০ সাল থেকে শুরু হয়েছে পেয়ারার বাণিজ্যিক আবাদ। এই আবাদ ক্রমশ বাড়ছে।  জেলায় এবছর ৭৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক পেয়ারার আবাদ হয়েছে।

ঝালকাঠি জেলার কীর্তিপাশা, ভিমরুলী, শতদশকাঠী, খাজুরিয়া, ডুমুরিয়া, কাপুড়াকাঠী, জগদীশপুর, মীরকাঠী, শাখা গাছির, হিমানন্দকাঠী, আদাকাঠী, রামপুর, শিমুলেশ্বর এই গ্রামে বৃহৎ অংশ জুড়ে বাণিজ্যিকভাবে যুগ যুগ ধরে পেয়ারার চাষ হয়। এসব এলাকায় উৎপাদিত পেয়ারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। কিন্তু করোনার কারণে এবছর পাইকার না আসার আশঙ্কা করছেন এখানকার চাষিরা।  

ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারা চাষি সুদেব কর্মকার বলেন, ‘এবছর ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আমাদের এখানে এবার পাইকাররা আসছে না। পেয়ারার মৌসুম শুরু হলেও কোন পাইকার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। আর লকডাউনের কারণে পর্যটকরাও এখানে আসতে পারছে না। যার ফলে আমার অনেক লোকসান হবে। সরকারের পক্ষ থেকে পেয়ারা চাষিদের সহযোগীতার করা প্রয়োজন।

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ‘কৃষি বিভাগ শুরু থেকে পেয়ারা চাষিদের সাথে ছিল। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। যার ফলে এবছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

অলোক সাহা/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়