ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে জমেছে পশুর হাট, তবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ১৭ জুলাই ২০২১  
ঠাকুরগাঁওয়ে জমেছে পশুর হাট, তবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা খোঁচাবাড়িহাটে জমে উঠেছে পশুর বেচাকেনা।  শনিবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে হাটে দেশি-বিদেশি নানা জাতের গরুর পাশাপাশি ছাগলও বিক্রি হচ্ছে।

তবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতাসহ দর্শনার্থীরা। জরিমানার পরও পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। 

দুপুরে ঠাকুরগাঁও খোঁচাবাড়ি হাটে প্রচুর গরু ও মানুষের ভিড় দেখা যায়। বেচাকেনাও ছিল ভালো। বড় বড় গরুর পাশাপাশি ছাগল, মহিষও ছিল হাটে। কেউ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন। কেউ আবার অপেক্ষায়, কাঙ্ক্ষিত দামে পশু বিক্রির। উপজেলা প্রশাসন ও ইজারাদারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মাইকিং করা হচ্ছে। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউ। পশু ক্রয়-বিক্রয়ের পরে হাসিল দেওয়ার ঘরেও ছিল গাদাগাদি।

হাটে গরু বিক্রি করতে আসা গৃহস্থ মো. কিয়ামত আলী বলেন, ৮ ও ৯ মণ ওজনের দুটি ষাঁড় নিয়ে এসেছেন। ক্রেতারা গরু দেখলেও উপযুক্ত দাম বলছেন না। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করে দেবেন।

ব্যাপারি হোসেন আলী বলেন, ৮টা গরু নিয়ে এসেছেন। ৪টা বিক্রি করেছেন। ছোট গরুর চাহিদা বেশি বলে জানান তিনি। গরু ক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, অনেকক্ষণ ঘুরে কালো রংয়ের একটি গরু কিনেছেন। বিক্রেতারা অনেক বেশি দাম চায়, দরাদরি করে কিনতে হয়।

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মাস্ক না পড়ার কারণ জানতে চাইলে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেন, গরুর হাটে আবার স্বাস্থ্যবিধি কিসের। মাস্ক পরে গরু কেনাবেচা হয় না। দুটি গরু নিয়ে মাস্ক ছাড়াই দাঁড়িয়ে ছিলেন মিজানুর নামে এক ব্যবসায়ী। মাস্ক পরেননি কেন জানতে চাইলে বলেন, মাস্ক আছে পকেটে।

দুই কিশোরসহ গরু কিনতে এসেছেন দেওয়ান নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। তার মুখে মাস্ক থাকলেও কিশোরদের মুখে ছিল না। মাস্ক না পরার কারণ হিসেবে দেওয়ান আলী বলেন, বছরে একবারই কোরবানি আসে। এই সময় এত নিয়ম-কানুন দিলে হয়। বাচ্চারা আনন্দ করবে কীভাবে?

খোঁচাবাড়ি হাটের ইজারাদার আনন্দ উত্তম কুমার বলেন, কোরবানি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হাটে বৃষ্টির মধ্যেও প্রায় ৮/৯ হাজার গরু উঠেছে। বিক্রিও হয়েছে বেশ ভালো। তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও মাস্ক পরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছেন। তবে কেউ মানছেন, আবার কেউ মানছেন না। আসলে অনেক লোকের সমাগম হলে একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার সবকিছু মানানো।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিটি হাটে আসা মানুষের জন্য বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। দুই ধরনের স্বেচ্ছাসেবকরা হাতধোঁয়া ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে কাজ করছে। এরপরও কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায় কিছু মানুষকে জরিমানাও করা হযেছে। সর্বোপরি মানুষ সচেতন না হলে পশুর হাটে স্বাস্থবিধি নিশ্চিত করা খুবই কঠিন বিষয়।

তিনি আরও বলেন, ‘কোরবানি ত্যাগের বিষয়। পশু জবাইয়ের মাধ্যমে যেমন ত্যাগের মহিমা প্রকাশ করছি, তেমনি স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।’ ঈদ উপলক্ষে গরুর হাটে ঘোরাঘুরি, বাইরে চা-নাস্তা খাওয়া- এ সব ত্যাগ করে করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
 

হিমেল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়