ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ১৮ জুলাই ২০২১  
চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

বন্দর নগরীর চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সংলগ্ন সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে রীতিমতো ফুঁসে উঠেছে চট্টগ্রাম। গত এক সপ্তাহ ধরে সিআরবি এলাকায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে বিভিন্ন সংগঠন। 

সর্বশেষ রোববার (১৮ জুলাই) বিকেলে সিআরবি এলাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। 

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর ফুসফুস ফুটো করে আমরা কোনো হাসপাতাল চাই না। হাসপাতাল করতে হলে সিআরবির বাইরে অনেক জায়গা রয়েছে। সেখানেই হাসপাতাল করা যেতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামের সবুজ প্রকৃতি ঘেরা সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ চট্টগ্রামবাসী কখনও মেনে নেবে না।’ 

বিকেলে সিআরবি এলাকায় প্রতিবাদী মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, রোভার ট্যুরিজম, বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন, গ্রিন ভয়েসসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। 

বাপার মানবন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, একটি দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সুরক্ষা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বনাঞ্চল প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় বাংলাদেশে বনাঞ্চল নেই। এই অবস্থার মধ্যেও সিআরবি এলাকায় সবুজ প্রকৃতি এবং শতবর্ষী বৃক্ষরাজি ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণ কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। 

চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক বলেন, চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ চট্টগ্রামবাসী কখনও মেনে নেবে না। যতদিন পর্যন্ত সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হবে, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাবে চট্টগ্রামবাসী।

চট্টগ্রাম কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের পৃথক এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক অক্সিজেনের কারখানা। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক পরিবেশ, বন, পাহাড় ধ্বংস করে শুধু হাসপাতাল নয়, কোনো ধরনের স্থাপনা করা উচিত নয়। হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও বিভিন্ন শিল্পের নামে পাহাড়, রেলওয়ের ভূমি দখলে ব্যবসায়ীদের ষডযন্ত্র বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন বক্তারা। 

একইসঙ্গে চট্টগ্রামের ফুসফুস ও বুকভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার স্থানটিকে ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে অবিলম্বে এ ধরণের হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহ্বান জানানো হয়।

গত বছরের মার্চ মাসে ঢাকার ইউনাইটেড গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিআরবিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতদিন এই বিষয়টি আড়ালে থাকলেও সম্প্রতি সিআরবিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হলে চট্টগ্রামের মানুষ এর প্রতিবাদ করে। 

রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়