ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চামড়ার দাম কম, লোকসানের ভয়ে কিনছেন না ব্যবসায়ীরা

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৯, ২২ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১২:৩২, ২২ জুলাই ২০২১
চামড়ার দাম কম, লোকসানের ভয়ে কিনছেন না ব্যবসায়ীরা

ঈদুল আজহা উপলক্ষে হবিগঞ্জের শহর ও গ্রামগঞ্জে অনেকেই কোরবানি দিয়েছেন। পরে পশুর চামড়া নামমাত্র মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।  অনেকে আবার মাদ্রাসায় চামড়া দান করেছেন। জেলার অনেক স্থানে ৫০টাকায় চামড়া বিক্রি হয়েছে।  বুধবার (২১ জুলাই) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জেলা শহরের শায়েস্তানগর এলাকার নূরুল হক কবির বলেন, এবার চামড়ার দাম পাওয়া যাচ্ছে না। কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কোরবানিদাতারা।  আমি এবার ৫৪ হাজার টাকা মূল্যের গরু কোরবানি করেছি।  সেই গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ১৫০ টাকায়।  কিন্তু সন্ধ্যায় একই ধরনের চামড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।  

হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল্লাহ সরদার বলেন, ৫৯ হাজার টাকা গরু কোরবানি করে মাদ্রাসায় চামড়া দান করে দিয়েছি। বিরামচর গ্রামের শাহজাহান মরুব্বী বলেন, চামড়ার ক্রেতা নেই।  ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করা গরু কোরবানি করে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে চামড়া মাদ্রাসায় দান করেছি।  চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের বাসিন্দা মাছুম মিয়া বলেন, অনেককেই চামড়া মাদ্রাসায় দান করেছেন। লালচান্দ চা বাগান এলাকার এসএম সুমন বলেন, বিভিন্ন স্থানে লাখ টাকায় গরু কোরবানি দিয়েও চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কম।  যারা কোরবানি দিয়েছেন, তারা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।  করোনার প্রভাবে এমনটা হচ্ছে বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

মৌসুমী ব্যবসায়ী কাজল মিয়া বলেন, ১০টি চামড়া কিনেছি।  লাভের আশায় চামড়া কিনে এখন পাইকারের কাছে বিক্রি নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।  কারণ, পাইকাররা চামড়া কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

চামড়া ব্যবসায়ী সমুজ মিয়া বলেন, পুঁজি খাটিয়ে চামড়া ক্রয় করে লাভ না করতে পারলে কী উপায় হবে? তাই বুঝে শুনে চামড়া কিনতে হয়েছে।

হবিগঞ্জে একসময় চামড়া কেনার জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো।  চামড়া কেনা নিয়ে হানাহানির ঘটনাও ঘটেছে।  গত কয়েক বছর থেকেই চামড়ার বাজার খারাপ যাচ্ছে।  তবে এবারের অবস্থা বেশি খারাপ।  এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের তেমন দেখা যায়নি।  

শহরকেন্দ্রিক চামড়ার বেশ কয়েকটি অস্থায়ী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি পিস ছোট চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং বড় চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, কম বা বেশি দামে নয়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা চামড়া ক্রয়-বিক্রয় করবেন।  এখানে কোনো প্রকারের অনিয়ম নেমে নেওয়া হবে না। 

মামুন/সাইফ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়