ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী তাদের

মোসলেম উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ২৬ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৪:৩৬, ২৬ জুলাই ২০২১
ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী তাদের

সাগরের গর্জন আর নদীর আছড়ে পড়া ঢেউ কার না ভালো লাগে। কিন্তু সহজে মিলিত হতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু দিনাজপুরের হিলির দক্ষিণ-পশ্চিমে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর শাখা ছোট যমুনা নদীর ছোট ছোট ঢেউয়ের সঙ্গে মিলিত হয়ে মিতালী গড়া যায় সহজেই। হিলির কয়েকজন নদী প্রেমিক যুবক যেন তারই দৃষ্টান্ত।

দিনাজপুর থেকে বয়ে আসা যমুনা নদীর শাখা নদীটি বিরামপুরের উপর দিয়ে ভারত হিলির ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির আটাপাড়া সীমান্ত হয়ে দক্ষিণে যমুনা নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এই শাখা নদীকে সবাই ছোট যমুনা নদী নামে জানে এবং ডাকে। কালের বিবর্তনে নদীটি অনেকটাই ভরাট হয়ে গেছে। তবে সরকার গত শুকনা মৌসুমে নদীটি খনন করেছেন। এখন তা আগের মতো প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

আগাম বর্ষার কারণে এবং ভারত থেকে ছেড়ে দেওয়া পানিতে বর্তমান ছোট যমুনায় স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। পানির পরিমাণ কম দেখা দিলেও, স্রোতের প্রভাব অনেকটাই বেশি। আর এই স্রোতে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন স্থানীয়সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসা নদী প্রেমিকরা।

রোববার (২৫ জুলাই) ছোট যমুনা নদী পাড়ে গেলে দেখা যায়, ছোট বড় সবাই মনের আনন্দে নিজেদের নদীর স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন। অনেকেই পাড় থেকে ঝাপিয়ে পড়ছেন নদীর বুকে। এ যেন সুখের সাগরে নিজেকে হারিয়ে ফেলা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে আছেন নদীর বুকে, দেখে মনে হচ্ছে নদী আর তার ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী গড়েছেন তারা।

কথা হয় ছোট যমুনায় আসা হিলি রাজধানী মোড়ের মিজানুর রহমান মিজানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কর্ম ব্যস্ততার মাঝে আজ সময় হারিয়ে ফেলেছি। ছোট বেলায় প্রতিদিন গ্রামের সকল বন্ধুদের নিয়ে এই নদীতে গোসল করতে আসতাম। এখন কর্ম ব্যস্ততার কারণে আর আসা হয় না। কিন্তু ছেলে বেলার কথা বার বার মনে পড়ে। করোনা ভাইরাসের জন্য সরকার দিয়েছেন কঠোর লকডাউন, আর বন্ধ রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এই সুযোগে ছেলে বেলার সকল বন্ধুদের নিয়ে ছুটে এসেছি সেই নদীতে।

কথা হয় এখানে আসা কিশোর সোহেলের সঙ্গে। সোহেল বলেন, নদীর পাড়ে আমার বাড়ি। সব সময় এই নদীতে পানি থাকে না। বর্ষাকালে পানি থাকে, এসময় প্রতিদিন নদীতেই গোসল করি। আবার সকালে হাত দিয়ে এখানে মাছ ধরি। ডোবা নালার মাছের চেয়ে নদীর মাছের অনেক স্বাদ। যখন পানি শুকিয়ে যায়, তখন খুব নদীকে মিস করি।

হিলির তৌহিদ ইসলাম বলেন, মূলত স্মৃতির টানেই কয়েক বন্ধুর আজ এই নদীতে গোসল করতে আসা। যখন প্রাইমারিতে পড়তাম, তখন দুপুর হলেই ছুটে আসতাম সবাই নদীতে। অনেক বছর পর আসা, অনেকটা ভাল লাগছে, খুব মজা করছি, আর সেই ছোট বেলায় হারিয়ে যাচ্ছি, নিজেকে আজ খুবই ছোট মনে হচ্ছে।

মাহাবুব রহমান বলেন, অনেক স্মৃতি এই নদীর সঙ্গে রয়েছেআমার। কতো বার নদীতে আসা নিয়ে মায়ের কাছে বকুনি খেয়েছি তার হিসেব নেই। সকালে নামলে কখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে জানা ছিল না। বহুদিন পর এই নদীর বুকে নিজেকে হারালাম। 

দিনাজপুর/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়