ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

২০০ টাকার ভাড়া যখন ২২০০ টাকা!

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১২, ৩১ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৮:০৮, ৩১ জুলাই ২০২১

মাদারীপুরের ঢাকা- বরিশাল মহাসড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। চরম ভোগান্তির মধ্যেই শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর থেকে রাজধানীতে কর্মস্থলের দিকে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থলের দিকে ছুটছে মানুষ। সবাইকে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া। 

রোববার (১ আগস্ট) থেকে সরকার রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণার খবরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনি উপজেলা ভুরঘাটা এলাকায় শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর থেকে ভিড় করছেন ঢাকামুখী হাজার হাজার শ্রমিক। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের মধ্যে যাত্রী চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঠেকানো যাচ্ছে না যাত্রীদের। সাধারণ যাত্রীদের দাবি সরকার কলকারখানা খুলে দিলেও শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য কোনো ব্যবস্থা রাখেনি। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। ঢাকায় ফিরতে তাদের ব্যয় করতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। কেউ ফিরছেন হেঁটে। কেউ যোগাড় করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা। অনেকে আবার গাদাগাদি করে ট্রাকে চড়ে গন্তব্যে ছুটছেন।

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে এসেছেন লাবনী আক্তার সাহাবুদ্দিন দম্পতি কোলে তিন মাসের কন্যা শিশু। তারা কখনও মটর সাইকেল কখনও পায়ে হেঁটে ভুরঘাটা পর্যন্ত এসেছে। এখানে কোন যাত্রীবাহী পরিবহন নেই। তাই পায়ে হেঁটেই ছুটছেন। তিনি যাবেন গাজীপুর। তারা জানান, কারখানা মালিকরা কারখানা খোলার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু হাজার হাজার শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য কোন গণপরিবহন চালু রাখেননি। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সবাইকে।

বরিশালের মুলাদী থেকে এসেছেন লাকী আক্তার। সাভারের গামের্ন্টস কারখানায় কাজ করেন তিনি। লাকী আক্তার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও কোন যানবাহন পাননি। পরে তিনি ঝুঁকি নিয়ে উঠে পড়েন ট্রাকে। এভাবেই হাজার হাজার মানুষ করোনার ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ছুটে চলছে। 

ভোগান্তির স্বীকার লাবিদ নামে এক যাত্রী জানান, সরকার লকডাউন দিয়েছে। সেই লকডাউনের মধ্যেই আবার কারখানা খোলার ঘোষণা দিয়েছে। তাহলে এটা কেমন লকডাউন?

মৌসুমী নামে এক যাত্রী বলেন, ভুরঘাটা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে স্বাভাবিক সময় ভাড়া ২০০/৩০০ টাকা কিন্তু এখন মটরসাইকেল দাবি করছে ২২শ টাকা। যেতে যেহেতু হবেই, তাই ১০ গুন ভাড়ায়ও রাজি হয়েছি। কিছু করার নেই, এই সময়ে চাকরি হারাতে চাই না।

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষ যে যার মত ছুটে চলছে।  কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক বলেন, সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে চরম দুর্ভোগের মধ্যে কর্মস্থলে যাচ্ছে। পরে আমি মানবিক কারনে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি। যেহেতু গণপরিবহন বন্ধ তাই দুর্ভোগ কিছুটা লাঘবের জন্য তৎক্ষণাৎ কিছু ট্রাকের ব্যবস্থা করেছি। পায়ে হাঁটার চেয়ে ট্রাক কিছুটা আরাম দায়ক। যেহেতু কারখানা খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার, তাই এই শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মাদারীপুর/বেলাল/এমএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়