ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর খোরশেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২৫ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ২১:৩৮, ২৫ আগস্ট ২০২১
নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর খোরশেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

করোনার শুরুর দিকে সংকটকালীন সময়ে মৃতদেহের দাফন ও সৎকার করে আলোচনায় আসা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক নারী। ওই নারী খোরশেদের বিরুদ্ধে এর পূর্বে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন। তিনি নিজেকে কাউন্সিলর খোরশেদের বিবাহিত স্ত্রী বলেও দাবি করেছিলেন।

বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সেই নারী মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাড. রকিবউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. জসিম উদ্দিন বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার একমাত্র আসামি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। আদালত মামলাটি বিবেচনায় নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ১৬ মে ওই নারী নিজে বাদী হয়ে নাসিক কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় নিজেকে খোরশেদের বিবাহিত স্ত্রী দাবি করে ওই নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ ভিডিও’তে তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর, বানোয়াট ও মিথ্যা কাহিনী সাজিয়ে কুৎসা রটানোর অভিযোগ আনেন। খোরশেদ ছাড়াও সেই মামলায় ফতুল্লা থানার সস্তাপুর এলাকার ফেরদৌসী আক্তার রেহানা নামে এক নারীকেও আসামি করা হয়। সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন কাউন্সিলর খোরশেদ।

কাউন্সিলর খোরশেদ বিবাহিত। সন্তানও রয়েছে। মামলার বাদী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজেএমই’রও সদস্য। মামলার বাদী বলেন, তিনি কাউন্সিলর খোরশেদের বিবাহিত স্ত্রী। গত বছরের ২ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের এসএস ফিলিং স্টেশনে কাউন্সিলর খোরশেদ নিজেই কাজী ডেকে পাঁচ লাখ টাকা দেন মোহরে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। তবে বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে খোরশেদ বাদীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর বিভিন্নভাবে তাকে হেয়-প্রতিপন্ন করেন বলে অভিযোগ বাদীর। এর আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থও হাতিয়ে নেন খোরশেদ।

তিনি আরও বলেন, ‘খোরশেদ আমাকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করেছে। সে আমাকে কাবিননামা দেয়নি। তবে কাবিননামা ছাড়া তার সঙ্গে সম্পর্কের সকল প্রমাণ আমার কাছে আছে। সে যেহেতু আমাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেছে, সুতরাং তার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণের সমান। আমি তাই আদালতে সুবিচারের দাবিতে মামলা করেছি।’

এদিকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার পূর্বে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল ফেসবুক লাইভে এসে মামলার বাদী সাঈদা আক্তার শিউলীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন কাউন্সিলর খোরশেদ। এরপর ১৬ মে ওই নারী তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এবার বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন তিনি। এদিকে নাসিক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের দাবি, আসন্ন সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

রাকিব/ এমএম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়