ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

পদ্মার পানি বাড়ছে, ফরিদপুরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

ফরিদপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১  
পদ্মার পানি বাড়ছে, ফরিদপুরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

ফরিদপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। শনিবার (৪ সেপ্টম্বর) দুপুর পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি ৫ সে.মি. বেড়ে বিপৎসীমার ৭৪ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ এ তথ্য জানান। 

পদ্মায় পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় জেলার সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর, ভাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওইসব জায়গার সুপেয় পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে বহু গ্রামের ফসলি ক্ষেত, রাস্তা, নিচু এলাকার বসতবাড়ি।  

ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরে যাওয়ার তিনটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার একর আউশ ধানক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত। পদ্মা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। 

চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন জানান, উপজেলার গাজিরটেক, হরিরামপুর, চরঝাউকান্দা ও চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের একাংশ প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নগুলোতে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 

মোতালেব হোসেন জানান, উপজেলার ইউনিয়নগুলো চরাঞ্চলবেষ্টিত নিম্নাঞ্চল, তাই একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই প্লাবিত হয়। ওই সব এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও গবাদিপশুর খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙনে ১৫টি বসতভিটে বিলীন হয়ে গেছে। 

মধুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, কামারখালী ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে মধুমতির ভাঙন। হুমকির মুখে রয়েছে অসংখ্য বসতবাড়িসহ রউফনগরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।

আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া চরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাচুড়িয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরনারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মধুমতির পাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বিদ্যালয় দুটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

আলফাডাঙ্গা উপজেলার দায়িত্বে থাকা বোয়ালমারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) সন্তোষ কর্মকার জানান, নদীভাঙন রোধে বৃহৎ প্রকল্পের দরকার। পাউবো থেকে ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণের জন্য আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটি বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এছাড়াও নদী ভাঙন কবলিত স্থানে ভাঙনরোধে অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, পানিবন্দি মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। খাদ্যের পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উজ্জ্বল/মাসুদ/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়