সাড়ে ৬ কোটি টাকার সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পাবনা সদর উপজেলার জালালপুর থেকে একদন্ত বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেও সুফল পাচ্ছেন না। নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি দিয়ে ঠিকাদার কাজ করছেন অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরকারের আম্পান প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি পাবনার তত্ত্বাবধানে চলছে এই নির্মাণকাজ। অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলো পাবনার মেসার্স জিনাত আলী জিন্নাহ লিমিটেড।

পাবনা সদর উপজেলার ব্যস্ততম একটি সড়ক জালালপুর থেকে একদন্ত বাজার সড়ক। সড়কটি মেরামত ও সড়কের পার্শ্ব প্রসস্থতার জন্য সরকার আম্পান প্রকল্পের আওতায় ৬ কোটি ৪০ লাখ ২৬ হাজার ১৯৬ টাকা বরাদ্ধ দেয়। এলজিইডি পাবনার তত্ত্বাবধানে শিডিউল অনুযায়ী সড়কটি ১৮ ফুট চওড়া এবং ৩ ইঞ্চি ঢালাই দিয়ে মেরামত করার কথা রয়েছে। রাস্তারটির কাজ পান পাবনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিনাত আলী জিন্নাহ লিমিটেডের কনস্ট্রাকশন ফার্ম। কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠিানটি প্রসস্থ সাববেজ দু’টি ভালমতো রোলার না করেই তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের খোয়া (পোড়া মাটি) ব্যবহার করছেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কের কাজে বাঁধা দেন।

এলাকার উগ্রগড়, জোয়ারদহ, হামিদপুর ও গয়েশপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, আব্দুল কাদের, আজিজল মল্লিকসহ অনেকেই অভিযোগ করে জানান, ঠিকাদার রাতের আঁধারে পোড়ামাটি এনে দিনের বেলায় কয়েক ট্রাক পিকেট ভেঙে তার ওপর ছিটিয়ে দিয়েছে। আগের রাস্তাই ভালো ছিল। মেরামতের নামে নয়-ছয় ইট ব্যবহার করে রাস্তা করলে তা ৬ মাসও টিকবে না। তাই তারা এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচর করছেন, যেনো ঠিকাদারের কথামত খারাপ ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করা না হয়।

এলাকাবাসী এলজিইডির কর্মকর্তাদের প্রতি অভিযোগ করে জানান, ঠিকাদারের সঙ্গে তাদের যোগসাজস আছে।  এজন্য কেউই মাঠে নেই। ঝুলানো হয়নি কোনো কার্যতালিকার (ওয়ার্ক অর্ডার) সাইনবোর্ড।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই জেলার সাঁথিয়া উপজেলা ও ফরিদপুর উপজেলায় রাস্তার কাজ দুই নম্বর করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে। এই জিন্নাহ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সাঁথিয়া এলাকার মানুষ মানববন্ধনসহ বিভিন্ন মিছিল মিটিং করায় সেখান থেকে পোড়ামাটি সরিয়ে এনে পরে ভালো ইটখোয়া দিয়ে রাস্তার কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

এ ব্যাপারে গয়েশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান, জননেত্রী জনগণের সুবিধার্তে কোটি কোটি টাকা দিচ্ছেন রাস্তাঘাটের মান উন্নয়ন করতে। সেখানে দুই নম্বর কাজ তারা কখনই মেনে নেবেন না। দরকার হলে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার জিনাত আলী জিন্নাহ জানান, তিনি কখনই কাজ খারাপ করেন না। সব সময় ভালো কাজ করেন। ঠিকাদারি কাজে তার যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। ওই সড়কের কাজ ভালই হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। কেউ তাকে বেকায়দায় ফেলতে অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে এলজিইডি পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মণ্ডল জানান, তিনি কিছুদিন হলো এখানে যোগদান করেছেন। রাস্তার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখভালের নির্দেশ দিয়েছেন। রাস্তা নির্মাণে কোনো অনিয়ম হতে দেওয়া হবে না।