মুন্সীগঞ্জে পরিত্যক্ত গুদাম থেকে কৃষি প্রণোদনার সার ও বীজ উদ্ধার
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন আওতায় বিতরণকৃত রোপা আমন ধানের বীজ (৮০ কেজির, ৮ বস্তা) এবং ডিএপি ৬ বস্তা ও এমওপি ২ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বের) দুপুরে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী গ্রামের শেখ হারুনের পরিত্যক্ত আলুর গোলা থেকে এসব উদ্ধার করে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। কোলা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য (৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড) সীমা বেগমের স্বামী রতন খান ২ মাস আগে এগুলো এখানে লুকিয়ে রেখেছিলেন।
এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
এ ঘটনা জানাজানির পরে এলাকার অনেক কৃষকরা জানান, তারা সার ও বীজ ঠিকমত পান না। বাইরে থেকে ক্রয় করেন। আবার অনেকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সংগ্রহ করেন। রতন খান তার ঘনিষ্ঠদের সার বীজ দেন, যারা মূলত কৃষক তারা সহজে সার-বীজ পান না। আবার যারা কিছু টাকা পয়সা তাকে দেন, তাদেরকে দেওয়া হয় সার ও বীজ।
উদ্ধারকৃত সার ও বীজ ১৬ জন কৃষকের জন্য বরাদ্দ ছিল, সেখান থেকে মাত্র দুইজন নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বীজ ও সার এভাবে রেখে সময় অতিবাহিত করে নষ্ট করেছে রতন খান। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে এলাকাবাসীদের দাবি।
এর আগে বাদাম বীজ এনে আত্মাসাৎ করেকরেছিলেন। একজনকে দশ কেজি বাদাম দিয়েছেন। তাকে বলেছেন বাদাম হলে সমপরিমাণ তাকে দিতে হবে। বাকি বাদাম তিনি ভেঁজে খেয়েছেন। এমন অনেক অভিযোগ তার রয়েছে বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে রতন খান জানান, তিনি কোলা ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে কৃষকের জন্য বরাদ্দ এনেছেন। কিন্তু পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা এগুলো নেন নাই। তাই এখানে রেখেছেন।
তিনি আরও জানান বিক্রি বা অন্য কোন উদ্দেশ্য তার ছিল না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহসিনা জাহান তোরন। তিনি জানান, এগুলো কৃষি প্রণোদনার, গত ২ আড়াই মাস আগের। করোনা প্রকোপ বেশি থাকায় উপজেলায় যেন হৈ চৈ যাতে না হয়, সেজন্য ৫ জন করে কৃষককে গ্রুপিং করা হয়। সে গ্রুপের প্রতিনিধিগণ ও আমাদের কৃষি উপ-সহকারিদের উপস্থিতিতে এসব বীজ ও সার উপকরণগুলো বিতরণ করা হয়েছে। উপসহকারিদের তদন্ত রিপোর্টে জেনেছি কৃষক ঠিকমত পেয়েছে এবং তা জমিতে রোপন করেছে।
কিন্তু এখানে এসে দেখলাম পানির কারণে কৃষকরা বীজ লাগাননি। কারণ, গত বছর তারা পানির কারণে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন । এখন আমরা এগুলো উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে যাচ্ছি। তবে আজকের এ বিষয়ে এককভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো না। উপজেলা সার ও বীজ কমিটির সাথে মিটিং করে বিজ ও সার আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রতন/আমিনুল
আরো পড়ুন