ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

৫ দিনেও শুরু হয়নি ভাঙন কবলিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৯:১০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
৫ দিনেও শুরু হয়নি ভাঙন কবলিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস

১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলেও নদী ভাঙনে বিলীন হওয়া একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে ওই বিদ্যালয়ের ২৮৫ জন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। পরে বিদ্যালয়টি স্থানান্তির জায়গায় টিনের ঘর উঠানো হয়েছে। কিন্তু নতুন করে ঘর উঠানো জায়গাটিও পাঠদানের উপযোগী না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ পাঠদান শুরু হবে সে বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কিছুই জানেননা।

জানা যায়, ১৫০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৭ লাখ ৪৩হাজার টাকা ব্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ ২০১১-১২ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের জন্য একটি আধাপাকা ভবন নির্মাণ করে। যে জায়গায় বিদ্যালয়ের আধাপাকা ভবনটি ছিল সে জায়গাটি গঙ্গাধর নদে বিলীন হয়ে যায়।

এর আগে ভবনটির ইট, টিন, খুলে এনে জনৈক লালচান মিয়ার বাড়িতে রাখা হয়। লালচান মিয়ার বাড়ির পাশেই একটি নিচু জমিতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালানোর জন্য একটি টিনের ঘর তোলা হয়।

কিন্তু পরবর্তীতে ওই ঘরটিতেও পুরাতন ভবনের জানালা, দরজা, কাঠ, টিন, ইটসহ নানা সরঞ্জাম রাখা হয়।  বিদ্যালয়ের চেয়ার, ব্রেঞ্চ, সাইনবোডসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রাখা হয় গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে। ফলে সেখানে নেই বিকল্প উপায়ে পাঠদানের জন্য কোন উপযোগী স্থান।

ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জানান, স্কুল খোলার সংবাদে আমরা স্কুলে যাই কিন্তু স্কুলে দাঁড়ানোর মতো পরিবেশ নেই। একটি ঘর আছে সেখানে জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। কবে স্কুল ঠিক হবে আমরা জানিনা।

লালচান মিয়া জানান, স্কুলের জায়গা নদী ভাঙনে বিলিন হওয়ায় স্কুল ঘর তোলার জন্য আমি জায়গা দিয়েছি। তবে স্থানটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে গিয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ থাকে না। ফলে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছে।

কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, ভেঙে যাওয়া বিদ্যালয়ের টিন দিয়ে একটি ছাপড়া ঘর তোলা হচ্ছে। সেখানেই পাঠদান শুরু করা হবে। মাঠে কাঁদা পানি থাকলেও দু-তিন দিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে।

নারায়ণপুর ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নওশাদ আলী জানান, বিদ্যায়টি নদীগর্ভে চলে যাওয়ার পর একটি স্থানে ঘর তোলা হয়েছে। বন্যা এবং বৃষ্টির পানিতে মাঠসহ ঘরের মেঝে ডুবে থাকায় ১২ তারিখে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হয়নি।

নাগেশ্বরী উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান জানান, বিদ্যালয়টি সচল রাখতে পুরাতন টিন দিয়ে একটি ছাপড়া ঘর তৈরী করতে প্রধান শিককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ থেকে ২০হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়টি পুরোপুরি প্রস্তুত হবে।

সৈকত/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়