ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

হালিম হত্যার ৭ম দফার চার্জশিট আদালতে গৃহীত

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৬:৩৩, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
হালিম হত্যার ৭ম দফার চার্জশিট আদালতে গৃহীত

খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম হত্যা মামলার সপ্তম দফা চার্জশিট আদালতে গৃহীত হয়েছে।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শুনানি শেষে চার্জশিট গ্রহণ করেন বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী। 

একইসঙ্গে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর জন্য খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলাটি স্থানান্তর করা হয়। আগামী ২৫ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার মেহেদী হাসান। 

এর আগে সপ্তম তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ২৩ আগস্ট আদালতে সপ্তম দফা চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ আবুবকর। কিন্তু করোনাকালে আদালত বন্ধ থাকায় শুনানি পিছিয়ে যায়। 

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পাঁচ বার এবং থানা পুলিশ একবার নিয়ে ছয়বার এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে। বাদীপক্ষের নারাজি পিটিশনসহ বিভিন্ন কারণে আলোচিত এ মামলার তদন্ত ও চার্জশিট দফায় দফায় দাখিল করা হয়। 

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার মেহেদী হাসান বলেন, চার্জশিটের ওপর শুনানিকালে মামলার বাদী নিহত আব্দুল হালিম গাজীর স্ত্রী ফারহানা হালিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আদালতে চার্জশিটের বিষয়ে অনাপত্তি জানালে আদালত তা বিচারের জন্য গ্রহণ করেন। 

সপ্তম দফায় আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামের গাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে গাজী মো. ইমরান হাসান ওরফে মনিরুল, উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের মৃত. সোহরাব মোল্লার ছেলে মোল্লা জুলকার নাইম ওরফে মারজান আহমেদ ওরফে মুন্না, খুলনা নগরীর খালিশপুরস্থ কাশিপুর রাজধানী মোড় এলাকার মনোয়ার হোসেন মন্টু শেখের ছেলে মো. ইসতিয়াক হোসেন ওরফে ইস্তি, নগরীর দেয়ানা দক্ষিণপাড়ার মৃত আফতাব ঢালীর ছেলে মো. শাকিল হোসেন রানা, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার জোলাগাতী গ্রামের হানিফ হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার, নগরীর দৌলতপুর কেশবলাল রোড এলাকার আইয়ূব আলী হাওলাদারের ছেলে তাইজুল ইসলাম ওরফে রাজু, দেয়াড়া গ্রামের মৃত. আব্দুল খালেক শেখের ছেলে মারুফ হোসেন শেখ, নগরীর খালিশপুর মুজগুন্নি উত্তর পাড়ার রুস্তম মল্লিকের ছেলে সেলিম মল্লিক, চন্দনীমহল গ্রামের গাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে গাজী রেজাউল ইসলাম ওরফে বাবু গাজী ও গাজী এনামুল হাসান ওরফে মাসুম, আব্দুস সালাম গাজীর ছেলে নূরুল ইসলাম গাজী ওরফে নূরু গাজী, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত. আব্দুর রহমান শেখের ছেলে শাহীন শেখ, চন্দনীমহল গ্রামের গাজী জাহিদুল ইসলামের ছেলে গাজী মো. ইমরান হোসেন, চন্দনীমহল গ্রামের হাসান গাজীর ছেলে গাজী মো. জাহিদুল ইসলাম, সেনহাটি পশ্চিমপাড়ার আব্দুল আউয়াল মোল্লার ছেলে মানিক মোল্লা, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত. আব্দুল মজিদের ছেলে আনিসুর রহমান, দেয়াড়া গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে মুরাদ ওরফে গালকাটা মুরাদ, চন্দনীমহল গাজীপাড়া এলাকার মো. আমজাদ সরদারের ছেলে মাসুদ সরদার, সেনহাটি গ্রামের বাকামিয়ার ছেলে মাসুদ, হাজীগ্রামের মৃত. মোস্তফা মোল্লার ছেলে দিদার মোল্লা, চন্দনীমহল গোরস্থানের মোড় এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে তরিকুল ইসলাম, স্টার জুটমিল ১নং গেট এলাকার মৃত. সিরাজুল হকের ছেলে হুমায়ূন কবির, মোঃ হাসেন আলীর ছেলে শেখ মনিরুল ইসলাম (সাংবাদিক), সেনহাটী গ্রামের সোহরাফের ছেলে মুরাদ, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত আঃ মজিদ মল্লিকের ছেলে আব্দুল রকিব মল্লিক, নগরীর খালিশপুর এলাকার হানিফের ছেলে মোঃ মনিরুল, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত হাশেম গাজীর ছেলে আজগর গাজী ও দৌলতপুরের পাবলা এলাকার মৃত সাংবাদিক আজিজ শেখের ছেলে শহীদুল ইসলাম শাহীন, চন্দনিমহল গ্রামের রুস্তম আলী মোল্লার ছেলে মোল্লা আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম মোল্লা এবং নগরীর দৌলতপুরস্থ পাবলা ক্রসরোড এলাকার আলতা ভিলা ছাত্রী নিবাসের শহীদুল ইসলাম শাহীনের ছেলে শাওনুল ইসলাম শাওন। অভিযোগপত্রে মোট ৭৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি রেজাউল ইসলাম ওরফে বাবু গাজীর বাড়িতে হালিম গাজীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। মাসুম, মনিরুল, জাহিদুল ও আজগর গাজী পরিকল্পনাকারী ছিলেন। 

আরও উল্লেখ করা হয়, দিঘলিয়া থানা এলাকায় আওয়ামীলীগ সমর্থকদের মধ্যে একাধিক গ্রুপ ছিল। হালিম গাজী তৎকালীন এমপি’র সমর্থনপুষ্ট হওয়ায় অন্যান্য গ্রুপ কোনঠাসা হয়ে পড়ে। এলাকার বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ নিয়েও তার সঙ্গে এদের বিরোধ তৈরি হয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এসব গ্রুপ একত্রিত হয়ে যশোরের বেজপাড়ার হারুনের ছেলে আশিককে ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে ঠিক করা হয়। তাকে ঘটনার তিন দিন আগে এনে দৌলতপুরের হোটেল বোরাকে রাখা হয়। এরপর তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। ওই দিন সন্ধ্যায় দৌলতপুর দেয়ানায় এ হত্যাকান্ডের চুক্তি মোতাবেক টাকা পরিশোধ করা হয়। তবে, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। 
 

নূরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়