ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পাবনার খামারিরা 

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৪, ৪ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ২২:০৪, ৪ অক্টোবর ২০২১
গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পাবনার খামারিরা 

পাবনায় গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুপালন ও দুধ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে খামারিদের। সব খরচ মিটিয়ে আয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় গো-খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ১ বস্তা ভালোমানের গমের ভুষি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায়। কয়েক মাস আগে ছিল ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা টাকা। একইভাবে মাসকলাইয়ের ভুষির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকায়। ২ থেকে ৩ মাস আগেও এর দাম ছিল ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা।

১ বস্তা খৈল বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকায়। যা কয়েকমাস আগে ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকায় বিক্রি হতো। দাম বেড়েছে শুকনো খড়ের। বর্তমানে ১ মণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।

ভাঙ্গুড়া উপজেলার রাঙালিয়া গ্রামের কৃষক আলমাস আলী বলেন, ‘আমার খামারে ৪টি বাছুরসহ ১২টি গরু আছে। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। ভুষি ও খড় বাবদ দিনে প্রায় ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকা খরচ হয়। দুধ বিক্রি করে ২৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা আসে।’

ফরিদপুর উপজেলার মধ্যপুংগলী গ্রামের খামারি আশরাফ আলী বলেন, ২ থেকে ৩ মাস আগে ১ লিটার দুধের উৎপাদন খরচ ছিলো ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাইকারি বাজারে দুধের দাম খুব একটা বাড়েনি। বর্তমানে খুচরা বাজারে ১ লিটার দুধ ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে তা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। 

চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা গ্রামের ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমার খামারে ৫টি গরু থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ লিটার দুধ আসে। যা থেকে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা খরচ হয়।’  

তিনি বলেন, ‘বন্যার কারণে গো-চারণ ভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাঠে গরু চরানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কচুরিপানা খাওয়াতে হচ্ছে। কচুরিপানা খাওয়ালে দুধের ঘনত্ব কমে উৎপাদন কমে যায়।’  

ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা গ্রামের খামারি শফিকুল ইসলাম বলেন, দাম বাড়লেও আশানুরূপ দুধের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়ে গো-খাদ্য কিনতে হচ্ছে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুধ উৎপাদন করে তেমন লাভ হচ্ছে না। গো-খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে খামার বন্ধ করে দিতে হবে।

একই উপজেলার সোনাহারা প্রাথমিক দুগ্ধ সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের বেশিরভাগ খামারি মিল্ক ভিটায় দুধ সরবরাহ করে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং মিল্ক ভিটা থেকে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ব্যক্তি পর্যায়ে দুধ বিক্রি করার দিকে ঝুঁকছেন তারা।  

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন হোসাইন বলেন, বন্যার সময় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়। ফলে এ সময় গো-খাদ্যের দাম কিছুটা বাড়ে। আগামী কয়েকমাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। 
 

শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়