কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আনন্দ মিছিল
কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর সংযুক্ত হওয়ায় কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা আনন্দ মিছিল করেছে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে উখিয়ার ২নং ও ১৭নং ক্যাম্পসহ কুতুপালংয়ের ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গারা আনন্দ মিছিল বের করে। এ সময় ক্যাম্পের মাঝিরা (নেতা) সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন।
ক্যাম্প মাঝিরা জানান, গত বছর থেকে বাংলাদেশ সরকার নোয়াখালীর ভাসানচর দ্বীপে আধুনিক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে। সেখানে এ পর্যন্ত ১৭/১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে নিয়ে গেছে। কিন্তু এতদিন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর সেখানে মানবিক সহায়তায় অংশ নেয়নি। এখন জাতিসংঘ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে। তারা সরকারের সঙ্গে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিতে চুক্তি করেছে। তাই রোহিঙ্গারা ভাসানচরে এখন অনেক শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারবে।
মাঝিরা জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্তিতে সাধারণ রোহিঙ্গারা খুশি। রোহিঙ্গারা জানান, এখন অনেকে ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হবে।
কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে ভাসানচরে ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন এবং বর্ষা মৌসুমের কারণে এতদিন ভাসানচরে স্থানান্তর সাময়িক বন্ধ ছিল। আগামী মাসের মধ্যে ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের ইনচার্জ (উপ সচিব) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের চুক্তির পর ভাসানচরে ১ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে সংস্থাটি। রোহিঙ্গারা এতে খুশি। তাই তারা ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। ক্যাম্পের পরিস্থিতি এখন অনেক শান্ত।
সরকার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ওপর থেকে চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু ৮ হাজার ৭৯০ জন। নারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩১৯ জন ও পুরুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৪০৯ জন।
তারেকুর/বকুল
আরো পড়ুন